বাবুল হক, মালদহ: স্কুলেই বিয়েবাড়ির আয়োজন। রান্না-বান্নার সঙ্গে চলছে গান বাজিয়ে নাচ-গান। সকল রীতি মেনেই বিয়ের আয়োজন সারলেন বর ও কনে পক্ষ উভয়েই। তবে এই নিয়ে জোর চর্চা মালদহের কালিয়াচকের গার্লস হাই স্কুলে। ঘটনার নিন্দা করে স্কুলের পড়ুয়া, অভিভাবক, শিক্ষক এবং স্থানীয়রা।
রবিবার ছুটির দিনে মালদহের কালিয়াচকের গার্লস হাই স্কুলে আয়োজন করা হল বিয়ের অনুষ্ঠানের। ছুটির দিনে স্কুলের মধ্যে বিয়ে বাড়ির আয়োজন করায় প্রশ্নের মুখে স্কুল কর্তৃপক্ষ। ছুটির দিন হলেও ব্যবসায়ীর মেয়ের বিয়ের জন্য কেন স্কুল ব্যবহার করতে দেওয়া হল, এমন প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, “আজ এই আয়োজনের পর এবার থেকে প্রতি রবিবার ছুটির দিনে বিয়ের আসর বসবে স্কুলে।” কালিয়াচকের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্ণধার আলমগীর খান বলেন, “স্কুলে কেন বিয়েবাড়ি হবে? এই ঘটনায় এলাকার বাসিন্দা হিসাবে লজ্জাবোধ করছি। পাশাপাশি যারা স্কুল ভবনকে বিয়েবাড়ি হিসাবে ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
তবে এখানেই শেষ নয়, স্কুলে বিয়ের অনুষ্ঠান চলার ঘটনাটি শুনে অবাক হয়েছেন স্বয়ং ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। তাঁর অজান্তেই স্কুল ভবনকে ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন কালিয়াচক গার্লস হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সাবিনা ইয়াসমিন। প্রধান শিক্ষিকা বলেন, “কখনওই স্কুলবাড়িতে বিয়ের আসর বসানো উচিত নয়। এটা মেয়েদের স্কুল। ছাত্রীরা শুনলে তাদের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। আমাকে অন্ধকারে রেখেই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির এক কর্তা এবং একজন কর্মী স্কুলটিকে বিয়েবাড়ির জন্য ব্যবহার করতে অনুমতি দিয়েছেন বলে শুনেছি। আমি বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি।”
কালিয়াচক থানা থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে এই ঐতিহ্যবাহী কালিয়াচকের গার্লস হাই স্কুল। অতীতে কখনও এই স্কুলে এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি। এদিন বিয়ের জন্য স্কুলের মেন গেট থেকে স্কুলের ভিতরটাও বিয়েবাড়ির আদলে সাজানো হয়। সকাল থেকেই সেই সাজসজ্জা দেখে স্থানীয়দের মধ্যে গুঞ্জন চলছিল। এরপর বরযাত্রীকে ঢুকতে দেখে ঘটনাটি পরিষ্কার হয় তাদের কাছে। কালিয়াচক গার্লস হাই স্কুলের পাশেই রয়েছে ছেলেদের জন্য কালিয়াচক বয়েজ হাই স্কুল। জনবহুল এলাকায় স্কুলে বিয়ের আসর চলছে জেনে সাধারণ মানুষও কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পাশের কালিয়াচক হাই স্কুলের সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, “স্কুলে কখনও বিয়ের আসর বসানো ঠিক নয়। অন্যান্য শিক্ষামূলক এবং সংস্কৃতিমূলক অনুষ্ঠান স্কুল প্রাঙ্গণে হতে পারে। তবে বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানের জন্য স্কুল মোটেই উচিত স্থান নয়। এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন মালদহের জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) উদয়ন ভৌমিক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.