ধীমান রায়, কাটোয়া: ভাঙা ঘরে শুয়ে শুয়ে মাঝে মধ্যেই ‘লাখ টাকার’ স্বপ্ন দেখতেন হরি মাঝি। কিন্তু তিনি তার মনের ইচ্ছা কোনওদিন কারও কাছে ব্যক্ত করতে পারতেন না। করবেনই বা কি করে? কারণ আজন্ম তিনি মূক ও বধির। দারিদ্র্যের তীব্র যন্ত্রণা একাই বুকে বয়ে বেড়াতেন। যেমন শারিরীকভাবেও তিনি প্রতিবন্ধী। কিন্তু ৩০ টাকার টিকিটের মাত। রাতারাতি বদলে গেল ভাগ্য। পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার বামোর গ্রামের বাসিন্দা মূক ও বধির দিনমজুর লটারি (Lottery) কেটে এক কোটি টাকার মালিক।
সোমবার বিকেলে চারটের সময় লটারির ফলাফল ঘোষণার পর ভাতার এলাকায় রীতিমতো তোলপাড়। বামোর গ্রামে অনেকেই হরিকে দেখতে ভিড় করছেন। তবে প্রতিবেশীরা হরিকে পাহাড়া দিচ্ছেন তাঁর নিরাপত্তার জন্য। হরির বাড়ির লোকজন আনন্দে আটখানা। বামোর গ্রামের ঢলদিঘির পাড়ের বাসিন্দা বছর বিয়াল্লিশের হরি মাঝি। বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী, বিধবা মা, এক ছেলে। এক মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। স্ত্রী পুতুল মাঝি ও দিনমজুরি করেন। ছেলে সুজন অনেকদিন আগেই পড়াশোনা ছেড়ে দিনমজুরি করে। মাটির বাড়িতে খড়ের ছাউনি। ছোট ছোট দু’টি ঘরে কোনওরকমে থাকতে হয়। বৃষ্টি হলে ঘরের চাল দিয়ে জল পড়ে। এমনই শোচনীয় অবস্থার মধ্যে দিন কাটাতে হয়।
পুতুল জানান, তাঁর স্বামী মাঝেমধ্যে লটারির টিকিট কাটতেন। এদিন ছেলে সুজনের কাছে ৩০ টাকা চেয়ে সকালের দিকে ভাতার বাজারে গিয়েছিলেন। পুতুল বলেন, “টাকা নিয়ে ভাতার বাজারে গেলেও জানতাম না টিকিট কাটবেন। বিকেলে জানতে পারি এক কোটি টাকা লটারিতে পড়েছে।” হরি মাঝি ও এদিন যখন জানতে পারেন তখন তিনিও আনন্দ চেপে রাখতে পারেননি। তার বিধবা মা আর স্ত্রী কে ইশারায় বলছেন, “তোমাদের জন্য ভাল বাড়ি তৈরি করে দেব।”
ছবি: জয়ন্ত দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.