নিজস্ব সংবাদদাতা, হুগলি: রেলকর্মীদের জন্য চালু স্পেশ্যাল ট্রেনে উঠতে চান? যেতে চান নিজের গন্তব্যে? কর্মক্ষেত্রে? তাহলে আবেদন করুন। রেল পাস দেব!। হুগলি (Hooghly) শাখায় পরপর দু’দিন রেল অবরোধ তোলার সময় কর্তারা বলেছিলেন, তাঁরা দেখবেন যাতে সাধারণ যাত্রীদের ছাড়পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু করা যায়। সেই বক্তব্যকে হাতিয়ার করে নেমে পড়েছে একটি চক্র। বোঝানো হচ্ছে আবেদন করলে রেল পাস দেবে। সেই পাস পেতে কিছু খরচ করতে হবে। ফলে সেই আবেদনের চাহিদা এত বেড়ে যায় যে তার জন্য জেরক্স দোকানের সামনে লাইন পড়ে। এক একটি ফটোকপির জন্য ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে। আবার দেখা গিয়েছে, একটি গণ-আবেদনপত্র তৈরি করে সেটিতে কয়েকশো মানুষ সই করছেন। যা কিনা জমা পড়বে রেল কর্তাদের কাছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাণ্ডুয়া দিনভর ব্যবসা চলে মঙ্গলবার। স্পেশ্যাল ট্রেনে সাধারণ মানুষকে উঠতে দিতে হবে এই দাবিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল পাণ্ডুয়া। রবিবার রেল অবরোধ করেন নিত্যযাত্রী খেটে খাওয়া মানুষ। পাণ্ডুয়াকে অনুসরণ করে চুঁচুড়া, বৈচিতেও নিত্যযাত্রীরা রেল অবরোধ করেছিলেন। বিক্ষোভকারীরা তাদের লিখিত দাবি আরপিএফের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডান্ট মহম্মদ আসলামের কাছে জমা দেওয়ার পর তিনি তা ভেবে দেখার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। সেই লিখিত চিঠিকে হাতিয়ার করে মঙ্গলবার অনেক যাত্রীই স্পেশ্যাল ট্রেনে উঠে যাত্রা করেন। এদিকে পাণ্ডুয়া ষ্টেশনের কাছে একটি দোকানে সেই লিখিত চিঠি জেরক্স করার হিড়িক পড়ে যায়। সকাল থেকেই এদিন স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে নিত্যযাত্রীদের ভিড় উপচে পড়ে। আর এই নিত্যযাত্রীদের মাস পিটিশানের এই চিঠিকে সম্বল করে করোনা আবহের মধ্যেই রীতিমতো ব্যবসা ফেঁদে বসেন এক জেরক্স দোকানের মালিক।
বলা হয় এই চিঠি সঙ্গে থাকলে মিলবে রেল যাত্রার ছাড়পত্র। বিনা পয়সায় এই আবেদনপত্র দেখিয়ে যাত্রা করা যাবে। পরে ছাপা পাসও মিলতে পারে। শোনা মাত্রই জেরক্সের দোকানে ভিড় জমে যায়। এক কপি জেরক্স করতে ৩ টাকা থেকে শুরু করে পাঁচ টাকা, ১০ টাকা পর্যন্ত নিতে শুরু করেন সেই জেরক্স দোকানের মালিক। মূহুর্তের মধ্যে দোকানের সামনে লম্বা লাইন পড়ে যায়। দেদার বিকোতে শুরু করে রেল যাত্রার আবেদনপত্র। এর বিরোধিতা করে পাণ্ডুয়া ব্লক তৃণমূল (TMC) সভাপতি অসিত চট্টোপাধ্যায় জানান এটা অবৈধ। মানুষকে ঠকানো হচ্ছে। অবিলম্বে প্রশাসনের এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এদিকে জেরক্সের দোকনের মালিককে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন জেরক্সের একটা খরচা আছে তাই নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এই জেরক্স দেখিয়ে ট্রেনযাত্রার ছাড়পত্র মিলবে, এই রকম কথাবার্তা বলা হচ্ছে কেন প্রশ্ন করতেই দোকান মালিক শাটার নামিয়ে তালা দিয়ে চলে যান। রেলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এরকম কোনও ব্যবস্থার প্রশ্নই নেই। এবং রেল কর্মীদের স্পেশ্যাল ট্রেনে সাধারণ কাউকে উঠতে দেওয়া হবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.