ধীমান রায়, কাটোয়া: মাসদেড়েক আগে কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ নিয়েছেন কাটোয়ার বাসিন্দা এক ব্যক্তি। হিসাবমতো দ্বিতীয় ডোজের সময় এখনও হয়নি। কিন্তু তার আগেই ভ্যাকসিনের (Vaccine) দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার শংসাপত্র পেয়ে গেলেন তিনি। শংসাপত্রে আবার উল্লেখ রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে তিনি দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন। এখন চিন্তায় পড়েছেন কাটোয়ার বাসিন্দা বছর ছেচল্লিশের সচ্চিদানন্দ ঘোষ। কারণ, দ্বিতীয় ডোজ আদৌ তাঁর কপালে জুটবে কিনা তা নিয়ে তৈরি হয়েছে আশঙ্কা। বাধ্য হয়ে পুরসভার দ্বারস্থ ওই ব্যক্তি। আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিয়েছেন সেই ‘ভুতুড়ে শংসাপত্র’ও। কাটোয়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপারসন সমীর সাহা যদিও বলেন, “একটা অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে ওই ব্যক্তি কোনওভাবে ভ্যাকসিন থেকে বঞ্চিত না হন।”
মঙ্গলকোটের কুলশুনা গ্রামে বাড়ি সচ্চিদানন্দ ঘোষের। কাটোয়া শহরে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে একটি চালকলে কাজ করেন। কর্মসূত্রে কাটোয়া শহরের স্টেডিয়াম পাড়ায় ভাড়া বাড়িতে সপরিবারে থাকেন। সচ্চিদানন্দবাবু জানান, তিনি কাটোয়া পুরসভার অধীন ভাগীরথী ইউপিএইচসি সেন্টার থেকে ১১ সেপ্টেম্বর কোভিড ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়েছেন। তাকে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী, ন্যূনতম ৮৪ দিন পর তার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার কথা। সেই হিসাবে তিনি ডিসেম্বর মাসে দ্বিতীয় ডোজ পাবেন।
কিন্তু ঘটনার সূত্রপাত সচ্চিদানন্দবাবুর মোবাইলের একটি মেসেজ ঘিরে। তাঁর কথায়,” চালকলের কাজে আমাকে বর্ধমান যাতায়াত করতে হয়। গত মঙ্গলবার বাসে চড়ে বর্ধমানে যাচ্ছিলাম তখন আমার মোবাইলে মেসেজ আসে। তাতে আমাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলা হয় আমি কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছি। এরপরেই কাজ সেরে এসে মালিককে প্রথম জানাই। তিনি আমাকে সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে শংসাপত্র বের করতে বললে ওদিনই শংসাপত্র বের করি।”
সচ্চিদানন্দবাবু প্রথমে ভেবেছিলেন অন্য কেউ ভ্যাকসিন নিয়ে ভুল করে তার মোবাইল নম্বর রেকর্ড হয়ে যেতে পারে। কিন্তু শংসাপত্র হাতে নিয়ে তিনি দেখেন তার নাম, প্রথম ডোজ নেওয়ার তারিখ এমনকি আধার কার্ডের নম্বর হুবহু মিলে যাচ্ছে। এরপরেই তিনি চিন্তার মধ্যে পড়েন। বাধ্য হয়ে পুরসভার দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। সচ্চিদানন্দবাবুকে দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে বলে অনলাইনে যে রেকর্ড রয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে অন্ধ্রপ্রদেশের পি মুরুদুলা বিশালক্ষী নামে চিকিৎসকের তত্বাবধানে জেপিএস এ কোনদুরু পিএইচসি থেকে গত মঙ্গলবার কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। তবে ওই রাজ্যে তিনি কখনই যাননি বলে জানান সচ্চিদানন্দ। কবে দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন পাবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ওই ব্যক্তি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.