প্রতীকী ছবি
সৈকত মাইতি, তমলুক: প্রায় বছর পাঁচেক আগে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় একমাত্র ছেলের। পুত্রশোকে একটু একটু করে মানসিক অবসাদে ডুবে গিয়েছিলেন স্ত্রী। তার পরে একাধিক চিকিৎসক দেখিয়েও সন্তানের মুখ দেখতে পাচ্ছিলেন না চণ্ডীপুরের (Chandipur) ঘোষ দম্পতি। অগত্যা সন্তানহীনতার থেকে মুক্তিলাভের আশায় পাশের রাজ্য ওড়িশার কটকে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন ওই দম্পতি। কিন্তু নিয়তির পরিহাসে ঘটল তার ঠিক উলটোটাই। নতুন করে সন্তানের মুখ দেখতে গিয়ে ওড়িশার জাজপুরে বাস দুর্ঘটনায় স্বামীকেই হারিয়ে ফেললেন গৃহবধূ অর্চনা দেবী।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম মনোজ ঘোষ (৪৬)। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার চণ্ডীপুর থানার ঈশ্বরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোলদা এলাকার বাসিন্দা। পেশায় প্রথম জীবনে মনোজ কলকাতার (Kolkata) আমতা মুন্সিরহাট এলাকায় একটি দোকানের কর্মী ছিলেন। কিন্তু সেখানে যা উপার্জন হত, তা দিয়ে তেমনভাবে সংসার চলছিল না। সেই কাজ ছেড়ে গ্রামেই ছোট ব্যবসা শুরু করেন মনোজ। এমন অবস্থায় একমাত্র পুত্র সুদীপ বছর পাঁচেক আগে বাড়িতে পাখা চালাতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা যায়। তাতেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন ঘোষপুরের ওই দম্পতি।
পুত্রশোক থেকে কোনওভাবেই বেরিয়ে আসতে পারছিলেন না অর্চনা দেবী ও মনোজ। তাই আবার সন্তানের পরিকল্পনা করেছিল ওই দম্পতি। কিন্তু তাতেই বাদ সাধে শারীরিক অবস্থা। চিকিৎসার জন্য বাসে শনিবার ওড়িশার (Odisha) কটকে গিয়েছিলেন তাঁরা। মঙ্গলবার সকালেই তাঁদের বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ওড়িশায় বাস দুর্ঘটনায় স্ত্রী অর্চনা গুরুতর জখম হলেও ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান মনোজ।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে চণ্ডীপুরের গ্রাম থেকে ওড়িশার উদ্দেশে রওনা দেয় মৃতের পরিবার পরিজনরা। মৃত মনোজের ভাই সনদ ঘোষ বলেন, “দাদা নিজেও একটা চোখে ঠিকমতো দেখতে পেতেন না। এভাবেই প্রতিবন্ধকতা নিয়ে দীর্ঘদিন চলার পর দাদা এবং বউদি দুজনেই ওড়িশায় চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন। কিন্তু এমনটা ঘটবে তা এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.