বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই নেই কাজ। সংসার চালানোর জন্য জমিয়ে রাখা সামান্য পুঁজিও লকডাউনে শেষ। স্ত্রী-সহ দুই সন্তানকে নিয়ে পরিবার চালাতে কার্যত হিমশিম খাচ্ছিলেন বছর ছত্রিশের এক যুবক। গত কয়েকদিন ধরেই আর্থিক টানাপোড়েন স্ত্রীর সঙ্গে মাঝেমধ্যেই ওই যুবকের মনোমালিন্য হচ্ছিল। দু’দিন আগেও স্ত্রীর সঙ্গে ওই যুবকের তুমুল অশান্তি হয়। স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করার পর মানসিক অবসাদে ভুগতে থাকে যুবক। এরপরই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন ওই যুবক। বাড়ির পিছনের একটি গাছ থেকে তাঁর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার নবদ্বীপের মুকুন্দনগর কলোনি এলাকায়।
মৃত ওই যুবকের নাম রামকৃষ্ণ দত্ত। বয়স ৩৬। ওই যুবকের পরিবারে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। রামকৃষ্ণ দীর্ঘদিন ধরেই থাকতেন তাঁর শ্বশুরবাড়িতে। তিনি ছিলেন পেশায় ঠিকা শ্রমিক। যদিও লকডাউনের জেরে কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন তিনি। ফলে তীব্র আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছিল। জমানো টাকা সব শেষ হয়ে গিয়েছিল। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, “স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে সংসার চালানোই কঠিন হয়ে গিয়েছিল। মাঝেমধ্যেই স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সংসার চালানো নিয়ে মনোমালিন্য হয়। বুধবার রামকৃষ্ণের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী মিঠুর প্রচণ্ড কথা কাটাকাটি হয়। তারপরই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন রামকৃষ্ণ দত্ত। বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। অনেকক্ষণ কেটে গেলেও বাড়ি ফেরেননি। তাতেই সন্দেহ হয় স্ত্রীর।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়ির পিছনে একটি লিচুবাগানে গিয়ে আঁতকে ওঠেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা দেখেন গাছ থেকে ঝুলছে রামকৃষ্ণের নিথর দেহ। খবর দেওয়া হয় নবদ্বীপ থানায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ওই যুবকের দেহ লিচুবাগান থেকে উদ্ধার করা হয়। যুবকের মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে পাঠায় নবদ্বীপ থানার পুলিশ। যদিও ওই যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় কেউ কোন অভিযোগ দায়ের করেনি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পারিবারিক অশান্তির জেরে মানসিক অবসাদে আত্মহত্যা করেছেন ওই যুবক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.