সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: শ্যালিকার সঙ্গে পরকীয়া জামাইবাবুর। তা জেনে ফেলেন ওই যুবকের স্ত্রী। পরকীয়ার জেরে দাম্পত্য সম্পর্ক ক্রমেই উষ্ণতা হারাচ্ছিল। পরিবর্তে স্ত্রীর সঙ্গে উত্তরোত্তর বাড়ছিল অশান্তি। কোনওভাবেই ঝগড়াঝাটি থামানো যাচ্ছিল না। এদিকে, শ্যালিকার সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক শেষ করতেও পারছিলেন না যুবক। তাই প্রায় বাধ্য হয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। জামাইবাবুকে চোখের সামনে মারা যেতে দেখে নিজেকে সামলে রাখতে পারেননি তরুণী। বিষ খেয়ে এবং হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। ওই যুবক মারা গেলেও, তরুণী হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
ভাইফোঁটা উপলক্ষে মঙ্গলবার স্ত্রীকে নিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর থানার বাপুলি বাজারের রামনগর গ্রামে শ্বশুরবাড়ি যান নিতাই মণ্ডল। সন্ধেবেলা শ্যালিকা মিনতি মণ্ডলকে সঙ্গে নিয়ে ওই এলাকায় কালীঠাকুর দেখতে বেরোন নিতাই। কিন্তু সন্ধে গড়িয়ে গেলেও শ্যালিকা ও জামাইবাবু বাড়ি ফেরেননি। তা দেখে দুশ্চিন্তা করতে শুরু করেন পরিজনেরা। বারবার নিতাই এবং মিনতির মোবাইল নম্বরে ফোন করা হয়। তবে তা সত্ত্বেও ফোনে পাওয়া যায়নি কাউকেই। কারণ, দু’জনেরই মোবাইল সুইচড অফ ছিল। উদ্বিগ্ন পরিজনেরা তড়িঘড়ি খোঁজখবর শুরু করে। কিন্তু রাতভর চারদিকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও দু’জনের কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি।
বুধবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা এলাকার একটি পুকুরের পাড়ে নিতাইয়ের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তার পাশেই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় শ্যালিকা মিনতিকেও। এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামজুড়ে চাঞ্চল্য দেখা দেয়। দু’জনের পরিজনেরা ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয়। শ্যালিকা এবং জামাইবাবুকে পাশাপাশি পড়ে থাকতে দেখে খবর দেওয়া হয় পুলিশে। এরপর পুলিশকর্মীরা নিতাই ও মিনতিকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠান। চিকিৎসক সঙ্গে সঙ্গেই নিতাইকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় শ্যালিকা মিনতিকে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই ভরতি ওই যুবতী। মিনতি জানান, “জামাইবাবুর সঙ্গে আমার খুবই ভাল সম্পর্ক। আমরা দু’জনে একে অপরকে খুব ভালবাসতাম। কিন্তু দিদি সেকথা জেনে ফেলে। তাই আমরা আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।”
জামাইবাবু ও শ্যালিকার প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নিতাই এবং তাঁর স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি চলছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান শ্যালিকা মিনতি সত্যি কথাই বলছে। শ্যালিকার সঙ্গে পরকীয়ার কথা জানাজানি হওয়াতেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন জামাইবাবু এবং ওই তরুণী। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.