ছবি: প্রতীকী
সৌরভ মাজি, বর্ধমান: দাম্পত্য অশান্তির জের। স্বামী, সন্তান ছেড়ে বাপের বাড়িতে চলে যান গৃহবধূ। বাড়ি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন স্বামী। আর তারপরই একই ঘর থেকে উদ্ধার বাবা ও ছেলের নিথর দেহ। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, ছেলেকে খুন করে আত্মঘাতী বাবা। বুধবার মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ থানার লোদনার নবগ্রাম কলোনিতে।
বছর তেত্রিশের অসীম মজুমদারে সঙ্গে তাঁর স্ত্রী রূপার বেশ কয়েক বছর আগে বিয়ে হয়। বছর সাতেকের একটি ছেলে এবং বছর নয়েকের একটি কন্যাসন্তানও ছিল তাঁদের। বছরখানেক ধরে বনিবনা হচ্ছিল না দম্পতির। রূপা খণ্ডঘোষের কুমিরকোলা গ্রামে বাপের বাড়িতে থাকছিলেন। নবগ্রাম কলোনির বাড়িতে ছেলে অমর ও মেয়ে নূপুরকে নিয়ে থাকতেন অসীম। বুধবার দুপুরে মেয়ে ঘরে ছিল না। সেই সময়ই এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে।
দুপুরে বাবা ও ছেলেকে দীর্ঘক্ষণ বাড়ির বাইরে দেখা যায়নি। ঘরেও কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রতিবেশীদের সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা ডাকাডাকি শুরু করেন। সাড়া না পেয়ে জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখেন, অ্যাসবেস্টসের ছাউনির কাঠামো থেকে ঝুলছে অসীম। তাঁরা পুলিশে খবর দেন। খণ্ডঘোষ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অসীমের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে। বিছানার নিচে পড়েছিল ছেলে অমরের নিথর দেহ। পুলিশ দেহ দু’টি উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তে পাঠায়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, স্বামীর সঙ্গে অশান্তি হওয়ায় রূপা বাপের বাড়িতে থাকছিলেন। অসীম স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে বেশ কয়েকবার শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু রূপা ফিরে আসেননি। এদিনও অসীম স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি না আসায় চরম সিদ্ধান্ত নেন অসীম। বর্ধমান সদর দক্ষিণের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সুপ্রভাত চক্রবর্তী জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে ছেলেকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই যুবক। ঘটনার পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনায় পুলিশে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এই ঘটনা সম্পর্কে আরও তথ্যের খোঁজে রূপাকে জেরা করতে পারে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.