অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: আলু তুলতে গিয়েছিলেন আরামবাগে। লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে সেখানে কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। তার একটা সরকারি প্রমাণপত্রও রয়েছে। আরামবাগের অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দেওয়া একটি কাগজও রয়েছে। কিন্তু তারপরও গ্ৰামে ফিরে আসার পরে বাড়িতে ঠাঁই হল না এক পরিযায়ী শ্রমিকের। নিজের স্ত্রী ও ছেলে বাড়িতে ঢুকতে দিলেন না তাঁকে। ফলে বাড়ি ফিরে এসে বুধবার দুপুরের পর থেকে দিনভর না খেয়ে বাইরে কাটাতে হয়েছে চণ্ডীচরণ মান্না নামে এক পরিযায়ী শ্রমিককে। ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা থানার জামনা গ্ৰাম পঞ্চায়েতের উত্তর জানা গ্ৰামের।
বৃহস্পতিবার সকালে জামনা অঞ্চলের তৃণমূল নেতা সুমঙ্গল দাসের নেতৃত্বে তিন দলীয় কর্মী গ্ৰামে যান। ঘরে ঢুকতে না পাওয়া চণ্ডীবাবুর সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর থাকার মতো ত্রিপল দিয়ে একটি অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করে দেওয়া হয়। আর তাঁর হাতে চাল, ডাল, আলু-সহ কিছু প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। এই ব্যাপারে চণ্ডীবাবুর ছেলে রামপদ মানা বলেছেন, “বাবা ফেব্রুয়ারি মাসে আরামবাগে যায় আলু তুলতে। তারপরের মাস থেকে লকডাউন শুরু হয়ে যায়। বাবা সেখানে আটকে গিয়েছিলেন। পরে ফিরতে চাইলে আমরা বারণ করেছিলাম। তারপরেও তিনি ফিরেছেন। করোনা সংক্রমণের ভয়ে তাঁকে আমি ও মা ঘরে ঢুকতে দিতে রাজি হইনি।”
ঘরে ঢুকতে না পেরে অভিমান চণ্ডীবাবু বলেছেন,”আমি শখ করে বাইরে যাইনি। আর কারও ক্ষতি করার জন্য ফিরে আসিনি। আমার টাকাপয়সা সব শেষ হয়ে গিয়েছিল। আর আমার সঙ্গে যারা ছিল তাঁরা সকলেই যে যার বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। আমি একা থেকে কি করব সেই ভেবে বাড়িতে ফিরে এসেছি।” আর তৃণমূল নেতা সুমঙ্গল দাস জানিয়েছেন, আপাতত এইটুকু সাহায্য করেছেন। পরে আরও করবেন। পাশাপাশি তাঁকে ১৪ দিনের জন্য এই ছাউনিতে আলাদা থাকতে বলা হয়েছে। জানা গিয়েছে তৃণমূল নেতাদের দেওয়া চাল, ডাল, আলু দিয়ে চণ্ডীবাবুর স্ত্রী টেপি মান্না রান্না করেছেন। আর বাবার সঙ্গে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে খাবার পৌঁছে দিচ্ছে ছেলে রামপদ। এদিকে পিংলার বিডিও শঙ্খ ঘটক জানিয়েছেন, সরকারের তালিকার বাইরে পিংলার বাসিন্দা কোনও পরিযায়ী শ্রমিক ফিরলে তাঁকে চিহ্নিত করা হবে। আর সেই কাজ শুরু হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.