দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে শ্যালিকাকে বাড়িতে ডেকেছিলেন জামাইবাবু। ভাল মন্দ না ভেবেই বিশ্বাস করে জামাইবাবুর বাড়িতে গিয়েছিলেন তরুণী। আর তাতেই হল বিপদ। জোর করে যৌন সম্পর্ক তৈরি করতে চেয়েছিল জামাইবাবু। আর তাতে বাধা দিতেই শ্যালিকাকে খুন করে পানাপুকুরে দেহ ফেলে দেয় সে। হুগলির ডানকুনির মীরপুরের ঘটনার আকস্মিকতায় কেঁপে উঠছেন প্রায় সকলেই। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত ২০ নভেম্বর রীনা খাতুন নামে এক তরুণী হুগলির ডানকুনির বাগপাড়ার বাড়ি থেকে বেরোন। রাত দশটা পর্যন্ত বাড়ি ফেরেননি তিনি। তা দেখেই রীনার পরিবারের লোকজন খোঁজাখুজি শুরু করে। সেই দিনই রাত একটা নাগাদ মীরপুরের একটি পানাপুকুরের মধ্যে একজনের পায়ের আঙুল ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর দেওয়া হয় ডানকুনি থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রীনার দেহ উদ্ধার করে। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে রীনার সঙ্গে শেষবার ফোনে কথা হয় তাঁর জামাইবাবু সফিকুলের। বিপদের আঁচ পেয়ে সফিকুল আগেই এলাকা ছাড়ে। প্রায় দশ দিন ধরে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে বেড়ায় সে। শুক্রবার গভীর রাতে সফিকুল তার বাড়িতে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বাড়িতে ঢোকার আগেই তাকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশি জেরায় সফিকুল জানায়, বাড়িতে স্ত্রী না থাকায় শ্যালিকা রীনাকে নিজের বাড়িতে ডেকে পাঠায়। জামাইবাবুর কথা শুনে রীনাও সফিকুলের বাড়িতে যায়। কিন্তু বাড়ির কাছেই নির্জন জায়গায় সফিকুলের সঙ্গে দেখা হয় রীনার। জোর করে শ্যালিকার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করে সফিকুল। তবে তাতে বাধা দেন রীনা। ধস্তাধস্তির মাঝে দু’জনই পাশের পানাপুকুরে পড়ে যায়। রীনা প্রাণভয়ে চিৎকার শুরু করে। পানাপুকুরের মধ্যে তাঁর গলা চেপে ধরে সফিকুল। কিছুক্ষণের মধ্যেই রীনা মারা যান। তা বুঝতে পেরে সফিকুল বাড়িতে চলে আসে। গভীর রাতে সে জানতে পারে পুলিশ শ্যালিকা রীনার দেহ উদ্ধার করেছে। তখন সে ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়।
এদিকে, ডানকুনি থানার পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় নজর রাখতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার গভীর রাতে লুকিয়ে বাড়িতে ঢোকার সময় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। মৃতার বাবা শেখ সমীর জানান, এই ঘটনার পর তিনি আর তাঁর ছোট মেয়েকে জামাইয়ের বাড়িতে পাঠাবেন না। বড় মেয়ের খুনির চরম সাজা দাবি করেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.