দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: এক বছর আগে বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল স্ত্রীর দেহ। তার পরের বছর গলায় ওড়নার ফাঁস লাগানো অবস্থায় মিলল মেয়ের দেহ। এবার নিজের মেয়েকে খুনের অভিযোগ উঠল বাবার বিরুদ্ধে। কিশোরীর নামে থাকা কিছু টাকা হাতানোর চেষ্টায় ওই ব্যক্তি মেয়েকে খুন করে বলেই অভিযোগ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কালীতলার ঘটনার তদন্ত করছে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ। তাকে আটক করে চলছে জিজ্ঞাসাবাদ।
নরেন্দ্রপুরের কালীতলায় ভাড়াবাড়িতে মেয়ে সুদেষ্ণাকে নিয়ে বাস বাবা অবিনাশ। বেসরকারি সংস্থায় সামান্য বেতনের চাকরি করে সে। বুধবার বিকেলে সুদেষ্ণাকে তার এক বান্ধবী বাড়ি থেকে ডাকতে আসে। সে দেখে ভিতর থেকে বন্ধ দরজা। কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। ঘরের জানলায় সামান্য ফাঁক ছিল। সেখান থেকে ঘরের ভিতরের দিকে তাকাতেই অবাক হয়ে যায় ওই কিশোরী। সে দেখে সিলিং ফ্যান থেকে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে সুদেষ্ণা। তড়িঘড়ি পাড়া প্রতিবেশী পুরো বিষয়টি জানায়। সকলেই সুদেষ্ণার বাবা অবিনাশকেও খবর দেয়।
সকলে মিলে ওই ভাড়াবাড়িতে পৌঁছয়। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। এক মুহূর্ত সময় না নষ্ট করে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। সুদেষ্ণার দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। কিশোরীর পরিবারের লোকজনের দাবি, সুদেষ্ণাকে খুন করেছে তার বাবা অবিনাশ। কিশোরীর মামার দাবি, বছরখানেক আগে সুদেষ্ণার মায়ের ঠিক একইভাবে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল। আত্মহত্যা নয়। তাঁকে খুন করা হয়েছিল বলেই অভিযোগ। সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল বুধবার। খুন করা হয়েছে কিশোরী মেয়েকেও। সুদেষ্ণা মামা আরও জানান, কিশোরীর মা মেয়ের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে ৩ লক্ষ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে রেখেছিলেন। ওই টাকা হাতানোর তাগিদেই মেয়েকে খুন করেছে সে। কিশোরীর মামার অভিযোগ, তাঁর ভগ্নিপতি অন্য মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক রাখে। তার মদতেই নিজের স্ত্রী এবং মেয়েকে খুন করেছে।
কিশোরীর মামা নরেন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানান। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযুক্তকে আটক করেছে। যদিও খুনের কথা এখনও স্বীকার করেনি অভিযুক্ত। মেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলেই দাবি তার। বাড়ির মালিক ও অন্যান্য ভাড়াটিয়াদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সুদেষ্ণার মোবাইল ফোনটিও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.