Advertisement
Advertisement

Breaking News

হাতি

ইট ছুঁড়ে হাতিকে বিরক্ত করার ‘শাস্তি’, দাঁতালের হামলায় মৃত্যু লোকশিল্পীর

পুরুলিয়ার ঘটনায় বনদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা।

A man allegedly killed by the attack of group of Elephant
Published by: Sayani Sen
  • Posted:December 11, 2019 8:29 pm
  • Updated:December 12, 2019 10:48 am  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: সঙ্গে তিনটি শাবক। তার মধ্যে দুটি সদ্যোজাত। ফলে তেরোটি হাতির এই দল প্রায় সপ্তাহখানেক ধরে পুরুলিয়া চক্কর কাটলেও সেভাবে কোন ক্ষয়ক্ষতি করেনি। বুধবার প্রায় হঠাৎ করেই অযোধ্যা পাহাড় থেকে এই দলটি বলরামপুরের লোকালয়ে চলে আসে। তারপর কখনও গৃহস্থের উঠোন, কখনও আমন ধানের জমি। কখনও আবার জাতীয় সড়ক হেলে দুলে পার হলেও ক্ষতি করা তো দূর অস্ত। নিজেদের অস্তিত্ব বোঝাতে গর্জনও শোনা যায়নি। আর সেই শান্ত হাতির দলকেই সোনাঝুরি গাছে উঠে ইট ছোড়ায় তেড়ে আসে দলে থাকা দাঁতাল। স্নায়ু ঠিক রাখতে না পেরে সেই গাছ থেকে পড়ে যান লোকশিল্পী। তারপরই ওই দাঁতাল শুড়ে তুলে মাটিতে আছাড় মেরে ‘খুন’ করে।  মৃত্যু হয় বলরামপুরের পাঁড়দ্দা গ্রামের প্রাচীন লোকশিল্প নাটুয়ার সহকারী বাদ্যকার ষষ্ঠী কালিন্দির। তবে তারপরেও শিক্ষা হয়নি স্থানীয়দের। হাতির দলের পিছনে ছুটে তাদেরকে রীতিমতো বিরক্ত করে যায় হাতি দেখতে ঘর থেকে বেরনো উৎসুক জনতা।

Elephant

Advertisement

বনদপ্তর ও পুলিশ মাইক নিয়ে হাতি থেকে দূরে থাকতে প্রচার করলেও কোন কাজ হয়নি। শেষমেষ সন্ধেবেলায় ওই হাতির দল পুরুলিয়া ডিভিশন থেকে কংসাবতী দক্ষিণ বিভাগের বরাবাজার বনাঞ্চলের পথের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে তাতেও সমস্যা শেষ হয়নি। নজিরবিহীনভাবে ঝাড়খন্ডের মতোই বলরামপুরের সীমানায় কুমারী নদীর পাশে টায়ার জ্বালিয়ে হাতির দলের স্বাভাবিক চলাচলে বাধা দেন বনকর্মীরাই। এমনকি শব্দবাজি ফাটিয়ে তাদের পথ অবরুদ্ধ করে বলে অভিযোগ। হাতি খেদাতে দুই ডিভিশনের এমন ভূমিকায় হতবাক বন্যপ্রাণপ্রেমীরা। সুপ্রিম কোর্টের বিধিনিষেধকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পুরুলিয়া-ঝাড়খন্ড সীমানায় হুলাপার্টি আগুন জ্বালিয়ে হাতি তাড়ায়  সেই  ছবি দেখা গেল পুরুলিয়ায়। এ বিষয়ে মুখ্য বনপাল (দক্ষিণ-পশ্চিম চক্র) সৌরভ চৌধুরির সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তবে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। 

[আরও পড়ুন: পুত্রশোক ভুলে দাঁড়িয়ে থেকে বউমার বিয়ে দিলেন শ্বশুর]

এদিকে, ঝালদা বনাঞ্চলে থাকা ঝাড়খন্ডের ২০-২২টি বুনো হাতি যথারীতি ওই এলাকায় তাণ্ডব চালায়। ওই বনাঞ্চলের খামার বিটের ঘসরা, হেঁসলা, কর্মাডি এলাকায় আমন ধান ও সবজি মিলিয়ে দেড় হেক্টর ফসল ক্ষতি করে।হাতির দলকে ঝাড়খন্ডের পথে পাঠানোর চেষ্টা শুরু করেছে বনদপ্তর। অযোধ্যা পাহাড়ের উসুলডুংরিতে থাকা ১৩ টি হাতি বলরামপুরের খেকরিডি, নামশোলের কাছে ধানবাদ-জামশেদপুর ৩২ নম্বর জাতীয় সড়কের খয়রাডি, ডুমারি, লায়াডি, সাগমা হয়ে ওই পাঁড়দ্দা গ্রামে আসে। সেখানেই দিনভর থাকে ওই দলটি। আর এই হাতির দল থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাবধান করতে সকাল থেকে সেখানে হাজির ছিলেন বলরামপুর বনাঞ্চলের আধিকারিক সুবিনয় পাণ্ডা, আড়শা বনাঞ্চলের আধিকারিক শাহনাজ ফারুক আহমেদ। এই হাতির দলটি ঝাড়খন্ড হয়ে বান্দোয়ান। তারপর গত শনিবার বান্দোয়ান, বরাবাজার থেকে আড়শা হয়ে বনদপ্তর এই দলটিকে লোকালয়ে হানা ঠেকাতে অযোধ্যা পাহাড়ে পাঠায়। কিন্তু ঝাড়খন্ডের ওই দল যে নতু্ন জায়গায় মানিয়ে নিতে পারছিল না তার প্রমাণ মেলে এদিন সেই পুরনো পথে বরাবাজার বনাঞ্চলের রাস্তা ধরায়। পুরুলিয়া-বাঁকুড়ায় বন্যপ্রাণ নিয়ে কাজ করা অনির্বাণ পাত্র বলেন, “হাতির দলের স্বাভাবিক চলাচলে বারবার বাধা দিচ্ছে বনদপ্তরই। এ তো দেখছি বনদপ্তরই বেআইনি কাজ করছে। এবার আমরা বিষয়টি উচ্চপর্যায়ে জানাতে বাধ্য হব।”

ছবি: অমিতলাল সিং দেও

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement