রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: প্রেমিকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিদ্যুতের শক দিয়ে স্বামীকে খুন! নেপথ্যে ইউটিউব। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে নদিয়ার (Nadia) করিমপুরে। মৃতের স্ত্রী ও তার প্রেমিককে গ্রেপ্তার করল পুলিশ।
মৃতের নাম অনুপ মণ্ডল। তাঁর বয়স ৩৭ বছর। অনুপের প্রথম পক্ষের স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে আগেই। তাঁদের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী সুমনা। বছর খানেক আগে মুরুটিয়ার রাখালগাছি গ্রামের মেয়ে সুমনার সঙ্গে অনুপের বিয়ে হয়। স্বাভাবিক ছন্দেই চলছিল জীবন। মাস দেড়েক আগে মুরুটিয়ার একটি বিয়েবাড়িতে সুমনার সঙ্গে দেখা হয় সেখানকার হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী বছর ২৭-এর বিজন বিশ্বাসের। কথাবার্তা থেকে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে দুজন। প্রেমিকের সঙ্গে কথা বলার জন্য লুকিয়ে একটি ফোন ব্যবহার করত সুমনা। এমনকী স্বামীর অনুপস্থিতিতে বাড়িতেও আসত প্রেমিক। একাধিকবার সহবাসও করেছে তারা, এমনটাই খবর।
বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের গভীরতা বাড়তেই স্বামীকে খুনের ছক কষেন সুমনা। সঙ্গ দেয় প্রেমিক। ইউটিউব ভিডিও দেখে বিদ্যুতের শক দিয়ে স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করে মহিলা। একাধিকবার অনুশীলনও করেন। ব্যক্তিগত মুহূর্ত কাটানোর সময় একাধিকবার খুনসুটির নামে স্বামীর হাত পা তার দিয়ে বেঁধে ফেলে সুমনা। যদিও পরে তা খুলেও দেয়। গত মঙ্গলবার রাতে ওড়না দিয়ে স্বামীকে বাঁধে সুমনা। কিন্তু বিন্দুমাত্র সন্দেহ হয়নি স্বামীর। এর পর তামার তার হাতে বেঁধে বিদ্যুৎ সংযোগ করে দেয়। অনুপের অবস্থা অর্ধ-মৃত হয়ে গেলে বিজনকে ফোন করে সুমনা। বিজন ঘরে এলে অনুপের পা চেপে ধরে সুমনা। আর একটি ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু সুনিশ্চিত করে বিজন। এর পর দুজনে বাড়ির পিছনে অনুপের মৃতদেহ ফেলে আসে।
পরে মৃতদেহ উদ্ধারের পরই স্ত্রী সুমনাকে সন্দেহ হয় পুলিশের। এদিকে মৃতের বাবা পুত্রবধূর নামে খুনের অভিযোগ করে। শুক্রবার রাতে সুমনাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। চাপের মুখে দোষ স্বীকার করে নেয় সুমনা। জানিয়েছে, ইউটিউব দেখে খুনের ছক কষেছিল সে। পুলিশের দাবি, খুনের কারণ হিসেবে সুমনা জানিয়েছে, প্রেমিকের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের পর স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক বিষাদ লাগতো তার। আর সেই থেকেই স্বামীকে খুনের পরিকল্পনা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.