শুভদীপ রায় নন্দী, শিলিগুড়ি: দীর্ঘ তিনমাস চিতাবাঘেরর আতঙ্কে ঘুম উড়ে গিয়েছিল গ্রামবাসীদের। চিতাবাঘের থাবায় প্রাণ হারিয়েছিল অন্তত তিরিশটি গবাদি পশু। আতঙ্কে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছিলেন স্থানীয়রা। অবশেষে বনদপ্তরের পাতা খাঁচায় ধরা পড়ল চিতাবাঘ। বৃহস্পতিবার সকালে দার্জিলিং জেলার বিজনবাড়ি ব্লকের রেলিং নদী সংলগ্ন খাসমহল এলাকার কালিজে গ্রামে পাতা খাঁচায় ধরা পড়ে একটি পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘ। গ্রামবাসীদের দাবি, ওই এলাকায় এখনও অন্তত আরও আটটি চিতাবাঘ রয়েছে।
[আরও পড়ুন: কাটমানি বিক্ষোভে উত্তপ্ত রাজ্য, কোচবিহারে আক্রান্ত মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ]
জানা গিয়েছে, বাঘটির পিছনের পায়ে, নাকে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। খাঁচাবন্দি চিতাবাঘটিকে চিকিৎসার জন্য শিলিগুড়ি সংলগ্ন বেঙ্গল সাফারি পার্কে পাঠানো হয়েছে। আপাতত চিতাবাঘটিকে সাফারির নাইট শেল্টারে রেখে চিকিৎসা করা হবে৷ চার থেকে পাঁচদিন চিকিৎসার পর চিতাবাঘটির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বনদপ্তর। সম্পূর্ণ সুস্থ হলে সেটিকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিতে পারে বনদপ্তর। তবে আপাতত সাফারি পার্কেই ঠাঁই হতে চলেছে ওই চিতাবাঘটির। অন্যদিকে, বাকি চিতাবাঘ ধরতে আরও একটি খাঁচা ও চারটি ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বনদপ্তর।
এই বিষয়ে মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) রবিকান্ত সিনহা বলেন, “গ্রামবাসীদের মাধ্যমে ওই এলাকায় চিতাবাঘের হানার খবর পাওয়া যাচ্ছিল। সেইমতো বুধবার খাঁচা পাতা হয়। এদিন সকালে সেটিতে একটি পূর্ণবয়স্ক চিতা ধরা পরেছে। চিতাটির প্রাথমিক চিকিৎসার পর আমরা সেটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। মানুষের জন্য চিতাটি ফের বিপদ ডেকে আনতে পারে বুঝলে সাফারিতেই সেটিকে রেখে দেওয়া হবে।” দার্জিলিংয়ের ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার বিকাশ বিজয় বলেন, “এলাকায় মনিটরিং করা হচ্ছে। আমাদের আশঙ্কা আরও কিছু চিতাবাঘ রয়েছে।”
কার্শিয়াংয়ের ডিএফও (বন্যপ্রাণ) জিজু জেসপার বলেন, “শরীরের বেশ কয়েক জায়গায় ক্ষত রয়েছে। সেজন্য সাফারিতে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এলাকায় খাঁচার পাশাপাশি ক্যামেরা বসানো হবে।” বেঙ্গল সাফারি পার্কের ডিরেক্টর ধর্মদেও রাই বলেন, “সাফারির একজন ভেটেরেনারি চিকিৎসকের পাশাপাশি আরও দু’জন পশু চিকিৎসক চিতাবাঘটির চিকিৎসা করবে। সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার পর একটি রিপোর্ট মুখ্য বনপালকে পাঠান হবে। সেখান থেকে নির্দেশ আসার পরই পদক্ষেপ করা হবে।” তবে চিতাবাঘটি খাঁচায় ধরা পড়ায় কিছুটা স্বস্তিতে স্থানীয়রা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.