রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: ব্লেডের কাঁটাতার ঘেরা চা বাগান পেরতে গিয়ে মৃত্যুর মুখে পড়ল একটি চিতাবাঘ। আলিপুরদুয়ারের কালচিনির বিচ চা বাগানে বৃহ্স্পতিবার রাতে উদ্ধার হয় চিতাবাঘের মৃতদেহ। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে বনদপ্তর। কাঁটাতারের ফাঁদে পড়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছেন জলদাপাড়ার ডিএফও। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় তাঁরা।
মানুষ-বন্যপ্রাণ সংঘাত ক্রমবর্ধমান। জঙ্গল লাগোয়া এলাকাগুলিতে উভয়ের দ্বন্দ্বের ছবিটা চিরপরিচিত। কখনও লোকালয়ে হাতি, বাঘের উৎপাত, কখনও আবার অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে নির্বিচারে বন্যপ্রাণ নিধন মানুষের। হাজার সতর্কতা, প্রচার সত্ত্বেও এই প্রবণতা কমছে না। কালচিনির বিচ চা বাগানে গতকাল চিতাবাঘের মৃত্যু সেটাই ফের প্রমাণ করল। মানুষের তৈরি করা ফাঁদে পা দিয়ে প্রাণ গেল পূর্ণবয়স্ক একটি স্ত্রী চিতাবাঘের। স্থানীয় বনদপ্তর সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধে নাগাদ জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান থেকে একটি চিতাবাঘ বেরিয়ে গিয়েছিল। কাছেই বিচ চা বাগানটি সম্পূর্ণভাবে ব্লেডযুক্ত কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা। অন্ধকারে সেই কাঁটাতার পেরতে গিয়ে ব্লেডে এতটাই ক্ষতবিক্ষত হয় যে প্রবল রক্তক্ষরণ হতে থাকে তার। কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে চিতাবাঘটি।
জলদাপাড়া বনবিভাগের পক্ষ থেকে ওই চিতাবাঘের মৃত্যুর খবর স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। তার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছেন নীলপাড়া রেঞ্জের বনকর্মীরা। জলদাপাড়ার ডিএফও কুমার বিমল জানিয়েছেন, ”ফাঁদে পড়েই মৃত্যু হয়েছে চিতাবাঘটির। তার গলায় ফাঁদের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। বিচ চা বাগান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছি।” বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলে, তাদের সাড়া মেলেনি। বনদপ্তরের একাংশ চিতাবাঘটির মৃত্যুর জন্য বাগান কর্তৃপক্ষের দেওয়া ব্লেডযুক্ত কাঁটাতারকেই দায়ী করছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.