ভিডিও কলে কথা বলছেন পরিবারের সদস্যরা। নিজস্ব চিত্র
সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: রাখে হরি, মারে কে! অদৃষ্টই যেন রক্ষা করল তাঁদের। এমনই বিশ্বাস গঙ্গাসাগর থেকে কাশ্মীরে বেড়াতে যাওয়া ২৫ জনের একটি পর্যটক দলের। কাশ্মীর থেকে মঙ্গলবারই বিকেলে দলটির পৌঁছনোর কথা ছিল পহেলগাঁও (Pahalgam)। কিন্তু শেষমুহূর্তে যাত্রার সূচি পরিবর্তন করে নেন তাঁরা। অন্যত্র ঘুরে তারপর দলটি পহেলগাঁও যাবে বলে স্থির করে। আর সেই সিদ্ধান্তই জঙ্গিহানার (Attack) মুখোমুখি হওয়া থেকে বাঁচিয়ে দিল তাঁদের।
বন্ধুরা মিলে গঙ্গাসাগরের নরহরিপুর থেকে কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ২৫ জনের ওই দলে ছিলেন হিমাদ্রি মান্না, মানস পড়ুয়া, স্বপন বাগ, বাপি মান্না, মইদুল ইসলামরা। হিমাদ্রির নেতৃত্বে কাশ্মীর পৌঁছে মঙ্গলবার বিকেলেই তাঁদের যাওয়ার কথা পহেলগাঁওতে। কিন্তু আচমকাই সিদ্ধান্ত বদল করেন হিমাদ্রি। সকলে মিলে বসে ঠিক করেন, মঙ্গলবার নয়, একদিন পর তাঁরা যাবেন পহেলগাঁও। মুহূর্তের সেই সিদ্ধান্তই যেন বাঁচিয়ে দিল তাঁদের ২৫ জনের জীবন।
ওই ২৫ জন গঙ্গাসাগরবাসী এখন কাশ্মীরে হোটেলবন্দি। নৃশংস জঙ্গিহানা ঘটে যাওয়ার পর থেকে তাঁদের প্রত্যেকের পরিবারের আত্মীয়-পরিজনরা চেষ্টা করেছেন মোবাইলে খবরাখবর নিতে। কিন্তু কারও সঙ্গেই ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি আত্মীয়দের পক্ষে। উদ্বেগ তাই চরমসীমায় পৌঁছেছিল ওই পর্যটকদলের পরিবারগুলিতে। বুধবার দুপুরের পর যোগাযোগ সম্ভব হয়। হিমাদ্রির বাবা পরিতোষ মান্না বলেন, ‘‘ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। ওঁরা সকলেই নিরাপদে কিন্তু হোটেলবন্দি অবস্থাতেই রয়েছে। জানি না, কবে ফিরতে পারবে।’’ হিমাদ্রির মা গীতারানি মান্না বলেন, ‘‘জঙ্গিহানার খবর শোনার পর থেকেই উদ্বেগ বাড়ছিল। মঙ্গলবার ফোনে যোগাযোগ করতে না পারায় সেই উদ্বেগ চরমে ওঠে। ছেলের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা হয়েছে। ওঁরা হোটেলেই রয়েছে। ছেলে জানিয়েছে, মঙ্গলবারই ওদের পহেলগাঁও যাওয়ার কথা থাকলেও শেষমুহূর্তে মত বদল করে অন্যত্র বেড়াতে চলে গিয়েছিল ওঁরা। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।’’
এদিকে হিমাদ্রি, মইদুলদের পরিবার বুধবারের পর বৃহস্পতিবারও ভিডিও কলে কথা বলেন তাঁদের প্রিয়জনদের সঙ্গে। তাঁরা জানিয়েছেন, এখনও হোটেলবন্দি তাঁরা। খাওয়াদাওয়াও ঠিকঠাক মিলছে না। বাড়ি ফেরার দিনক্ষণ নিয়ে চিন্তিত তাঁরা সকলেই। পরিবারগুলির এখন একটাই প্রার্থনা, ঘরের ছেলেরা নিরাপদে যেন দ্রুত ঘরে ফেরে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.