Advertisement
Advertisement
তেহট্টের কাটোয়া যোগ

তেহট্টের করোনা আক্রান্তদের সঙ্গে ট্রেনে সফর, আইসোলেশনে কাটোয়ার CRPF কনস্টেবল

সংক্রমণ এড়াতে বন্ধ কাটোয়ার অগ্রদ্বীপ ও তেহট্টের বল্লভপাড়ার ফেরি চলাচল।

A lady CPRF constable travelled with the Corona infected family in Tehatta is in isolation
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:March 29, 2020 3:18 pm
  • Updated:March 29, 2020 3:18 pm  

ধীমান রায়: সংক্রামক ব্যধি। তাই সাবধানতায় একচুলও ফাঁক রাখতে চান না কেউ। নদিয়ার তেহট্টের করোনা আক্রান্ত পরিবারের সংস্পর্শে এসেছিলেন পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার সিআরপিএফ কনস্টেবল, জনমজুর। কেউ প্রত্যক্ষভাবে, কেউ পরোক্ষে। পরিবারের ৫ জন করোনা পজিটিভ, সেই খবর ছড়িয়ে পড়তে নিজেই সচেতন হয়ে হাসপাতালে আইসোলেশনে গিয়েছেন কাটোয়ার লেডি কনস্টেবল। আর এখনও পর্যন্ত ওই জনমজুরের কোনও হদিশ নেই। কাটোয়া মহকুমা প্রশাসন তাঁকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তেহট্টের বল্লভপাড়া ও কাটোয়ার অগ্রদ্বীপ ফেরি পরিষেবাও।

গত শুক্রবার রাতে নদিয়ার তেহট্টের এক পরিবারের ৫ জনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। তাঁরা মার্চের মধ্যভাগে দিল্লি গিয়েছিলেন একটি বিয়েবাড়িতে। সেখানে লন্ডন ফেরত এক যুবকের সংস্পর্শে আসেন। দেখাসাক্ষাৎ হয় আরও কয়েকজন বিদেশির সঙ্গে। লন্ডন ফেরত ওই যুবক তখনই COVID-19 আক্রান্ত ছিলেন। বিয়েবাড়ির পর সেখানকার সবাইকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠায় দিল্লি প্রশাসন। তবে তেহট্টের ওই পরিবার এক শিশু ও দুই কিশোর-কিশোরীকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসে। ১৯ মার্চ সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে নিউ দিল্লি-শিয়ালদহ রাজধানী এক্সপ্রেসে ওঠেন তাঁরা। ২০ মার্চ সাড়ে দশটা নাগাদ শিয়ালদহ পৌঁছন। সেখান থেকে লালগোলা প্যাসেঞ্জারে যান বেথুয়াডহরী। স্টেশন থেকে অটোয় তেহট্টে, নিজেদের বাড়ি। গোটা যাত্রাপথই ছিল জনবহুল। ফলে তাঁদের সংস্পর্শে এসে আর কে কে সংক্রমিত হয়েছেন, তা খুঁজতে গিয়ে গাঁ উজাড় হওয়ার জোগাড়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: করোনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো পোস্ট! সৌমিত্র খাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের]

শিয়ালদহ থেকে লালগোলা প্যাসেঞ্জারে এই করোনা আক্রান্ত পরিবারের ভ্রমণসঙ্গী ছিলেন কাটোয়ার অগ্রদ্বীপ পঞ্চায়েতের বাসিন্দা সিআরপিএফের লেডি কনস্টেবল, ২৩ বছরের যুবতী। তিনি একই ট্রেনে যাচ্ছিলেন তেহট্টে, এক আত্মীয়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যোগ দিতে। ওই পরিবারের পাশের আসনেই ছিলেন তিনি। ফুটফুটে ৬ মাসের শিশুটিকে কোলে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আদর করেছেন, অন্যদের সঙ্গে মেলামেশা করেছেন। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে ট্রেনে সফর করার পর তিনি নিজেই তেহট্টে পৌঁছে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। সব স্বাভাবিকই ছিল। কারণ, তিনি সুস্থ ছিলেন। কিন্তু শুক্রবার রাতে ওই পরিবারের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর এই লেডি কনস্টেবলের সবটা মনে পড়ে যায়। মনে পড়ে, তিনি ওই পরিবারের সঙ্গেই তো তেহট্টে এসেছেন। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় ব্লক প্রাথমিক হাসপাতালে ছোটেন। তাঁকে আইসোলেশনে রাখা হয়।

[আরও পড়ুন: ছুটি কাটাতে গিয়ে বিপত্তি, লকডাউনে ওড়িশায় ‘বন্দি’ দুর্গাপুরের ২ যুবক]

এখানেই শেষ নয়। কেতুগ্রামের এক জনমজুর কাজের জন্য যান তেহট্টের কৃষ্ণপুর গ্রামে। কয়েকদিন ওই বাড়িতে থেকে তিনি কাজ করেন। কিন্তু তেহট্টে করোনা আক্রান্তদের খবরটি জানাজানি হতে তিনি ভয় পেয়ে যান। শনিবার রাতে ওই বাড়ি থেকে পালিয়ে বল্লভপাড়া ফেরিঘাট হয়ে ফেরার হন। এখনও তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাঁর খবর পেয়ে কাটোয়া মহকুমা প্রশাসন কেতুগ্রাম পুলিশকে দায়িত্ব দিয়েছে, এই ব্যক্তিকে খুঁজে বের করার। কাটোয়ার এই দু’জন করোনা আক্রান্ত পরিবারের সংস্পর্শে আসার খবর পেয়ে সচেতন হয়েছে কাটোয়া পৌরসভাও। পূর্ব বর্ধমান এবং নদিয়া জেলা সংযোগকারী অন্যতম ব্যবস্থা জলপথ পরিবহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কাটোয়ার অগ্রদ্বীপ এবং তেহট্টের বল্লভপাড়ার মধ্যে ফেরি চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে পৌরসভা। জরুরি প্রয়োজনেই মিলবে পরিষেবা।

Katwa-Tehatta Ferri

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement