চন্দ্রজিৎ মজুমদার, কান্দি: করোনা আর আমফানের কোপে করুণ অবস্থা বহু গরিব পরিবারের। কাজের অভাবে সংসারে খাবারের টান। কোনওক্রমে যেন দিন কাটে। তবে এমনই এক পরিবারের প্রতি সহায় উপরওয়ালা। লটারি কেটে হাজার-লাখ নয়, একেবারে কোটিপতি হয়ে গেলেন এক দিনমজুর!
একশো কুড়ি টাকার দুই ঘর লটারির টিকিট কিনেছলেন মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামের দিনমজুর মহরম শেখ। ভাগ্যের শিকে ছেঁড়ে তাঁর। লটারির প্রথম পুরস্কার হিসেবে এক কোটি টাকা পান তিনি। সংসারের হাল ফেরানোর পাশাপাশি ছেলেদের ভবিষ্যৎও সুনিশ্চিত করার আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছেন কোটিপতি পিতা।
সোমবার খড়গ্রামের কীর্তিপুর গ্রামের বাসিন্দা মহরম শেখ কোটিপতি হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ামাত্রই আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠেন এলাকার বাসিন্দারা। শুধু জলেই জল বাঁধে না। অভাবের সংসারেও মুখ তুলে চান উপরওয়ালা। মহরম শেখ তারই দৃষ্টান্ত। কী করবেন এই অর্থ দিয়ে? কোটিপতি মহরম বলছেন, এই টাকার একটা অংশ দিয়ে কিছুটা জমি জায়গা কিনে চাষবাস করে সংসার চালাবেন। আর ছেলেদের বাড়িঘর তৈরির কাজে কিছুটা অর্থ দেবেন। কাঁচা বাড়িতে থাকা খুবই কষ্টকর। এবার মাথার উপর পাকা ছাদ হবে ওই পরিবারের।
স্বামী রাতারাতি কোটিপতি হয়ে ওঠায় খুবই খুশি মহরমের স্ত্রী মনোয়ারা বিবি। বলছেন, “খুব কষ্ট করে পরের জমিতে দিনমজুরি করে সংসার চালাতে হয়। এবার ঠাকুর মুখ তুলে তাকিয়েছে। আমরা খুব খুশি।” খড়গ্রাম থানা এলাকার লটারি বিক্রেতা নুর আলম জানিয়েছেন, মহরম শেখ মাঝেমধ্যেই তাঁর দোকানে এসে চা খেতেন, আড্ডা দিতেন এবং দুই-এক ঘর লটারির টিকিট কাটতেন। রবিবার সন্ধ্যায় মন খারাপ করে মহরম শেখ তাঁর দোকানে এসে বসেন। আক্ষেপ করে বলেন, লকডাউনে সবই শেষ হয়ে গিয়েছে। কীভাবে সংসার চালাবেন ভেবে কূল পাচ্ছেন না। বিক্রেতাই আশ্বস্ত করে দোকানে অবশিষ্ট দুই ঘর ১০ সেমের টিকিট তাঁর হাতে ধরিয়ে দেন। সোমবার সকালে ফল দেখতে গিয়ে টিকিট মিলিয়ে দেখেন, মহরমই কোটিপতি হয়ে উঠেছেন। ক্রেতার বাড়ি গিয়ে নিজেই সুখবর দিয়ে আসেন। তবে এত পরিমাণ অর্থ সামলে রাখাও মুখের কথা নয়। মহরমের অবশ্য বিশ্বাস, অর্থ যখন এসেছে, উপরওয়ালার কৃপায় তা সুরক্ষিতও থাকবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.