সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: ট্রেন্ডি জামাকাপড়, স্মার্টফোন, ব্লুটুথ-সহ আধুনিক জিনিসই গিফট হিসেবে এ যুগে যেন সব থেকে বড় পাওনা। তাই ভাইফোঁটা হোক বা অন্য কোনও অনুষ্ঠান এই ধরণের গিফটের অপেক্ষাতেই থাকে নেটিজেনরা। তবে শুধু ভাইকে খুশি করতে নয়, এবারের ভাইফোঁটায় ভাইয়ের মঙ্গলের জন্য বাস্তবেই যমের দুয়ারে কাঁটা দিতে উপহার হিসেবে ভাইয়ের হাতে হেলমেট তুলে দিলেন ঝাড়গ্রামের ২ দিদি।
ভাইফোঁটা মানেই স্পেশ্যাল দিন। সকালে ফোঁটা সেরে চুটিয়ে আড্ডা। তারপর দুপুর হতেই জমিয়ে ভুরিভোজ। এটাই যেন নিয়ম। ঠিক এভাবেই ভাইফোঁটার দিন উদযাপনের পরিকল্পনা করেছিলেন ঝাড়গ্রাম শহরের বাছুরডোবার বাসিন্দা দেবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়। নিয়ম মেনে দিদি দেবপূর্ণার হাতে ফোঁটাও নেন তিনি। কিন্তু উপহার হাতে পেয়েই কিছুটা চমকে ওঠেন দেবজ্যোতি। কারণ, ভাইফোঁটার উপহার হিসেবে দিদি তাঁর হাতে তুলে দিয়েছেন হেলমেট। উপহারের গুরুত্ব বুঝেই তা গ্রহণও করেন দেবজ্যোতি। দিদির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছেন যে, হেলমেট পরে তবেই বাইক নিয়ে রাস্তায় বের হবেন। হেলমেটের গুরুত্ব অন্যদের বোঝাবেন, এমন প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। গোপীবল্লভপুর ১ নম্বপ ব্লকের কেন্দুগাড়ি অঞ্চলের ঝাটিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা শম্পা পাত্র। রীতি মেনে তিনিও ভাইকে ফোঁটা দিয়েছেন। তবে উপহার হিসেবে তাঁর ভাইও পেয়েছেন হেলমেট।
পুলিশ এবং সরকারের পক্ষ তরফে লাগাতার সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ প্রকল্পের প্রচার করা হচ্ছে। বিভিন্ন পুজো কমিটির তরফেও এবছর সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফের প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু তাই বলে ভাইফোঁটার উপহারে এমন প্রচার সত্যিই অনবদ্য। হেলমেট উপহার পেয়ে দেবজ্যোতি বলেন, “দিদিরা ভাইদের ফোঁটা দেয় দীর্ঘায়ু কামনা করে। তাই এই উপহার সত্যিই অর্থপূর্ণ।” তাঁর কথায়, ভাইফোঁটার মতো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এভাবে পথ সচেতনতার বার্তা পৌঁছে যাবে সকলের কাছে। ঝাটিয়াড়া গ্রামের শম্পা পাত্র বলেন, “ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিয়ে থাকি। তাই ভাই যখন রাস্তা ঘাটে গাড়ি নিয়ে বের হয় তখন হেলমেট যেন মাথায় থাকে। জীবন যেন সুরক্ষিত করতে পারে সেই কারণেই উপহার স্বরূপ হেলমেট দেওয়া।”
ছবি : প্রতীম মৈত্র
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.