আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে সীমান্তের বহু মানুষ।
শান্তুনু কর, জলপাইগুড়ি: মুর্শিদাবাদের পর এবার ময়নাগুড়ি। নাগরিক পঞ্জিতে নাম বাদ পড়ার আতঙ্কে মর্মান্তিক পরিণতি হল আরও একজনের। পূর্বপুরুষের নথি কিংবা ভিটেমাটির দলিল জোগাড় করতে স্থানীয় ব্লক অফিস, ভূমিরাজস্ব দপ্তরে ঘুরেও কোনও সমাধান না পেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন ওই ব্যক্তি। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ির বড়কামাত এলাকায়।
কয়েকদিন আগেই অসমে নাগরিক পঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। বাদ পড়েছে ১৯ লক্ষের নাম। এরপর থেকেই বাংলায় এনআরসি হলে কী হবে, তা ভেবেই আতঙ্কের প্রহর কাটাচ্ছে রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। আর সেই আতঙ্ক থেকেই এক ভয়ংকর সিদ্ধান্ত নিলেন এক ব্যক্তি। জানা গিয়েছে, ময়নাগুড়ির বাসিন্দা অন্নদা রায় নামে ওই ব্যক্তির চার বিঘা জমি রয়েছে। সেই জমিতে চাষ করেই সংসার চালাতেন অন্নদাবাবু। কিন্তু সেই জমির পর্যাপ্ত নথি ছিল না তাঁর কাছে। আর সেই কারণেই বেশ কয়েকদিন ধরে এনআরসি আতঙ্ক গ্রাস করেছিল তাঁকে। কি করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। ফলে বেশ কিছুদিন ধরে সকলকে সমস্যার কথা জানান। দলিল জোগাড় করতে বিভিন্ন দপ্তরেও ঘোরেন তিনি। কিন্তু তাতেও কার্যত কোনও কাজ হয়নি।
এরপর শুক্রবার সকালে ময়নাগুড়ি ব্লকের মাধবডাঙ্গা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বড়কামাত এলাকায় রেলগেটে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ওই ব্যক্তির দেহ উদ্ধার হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে পাঠায়। ইতিমধ্যেই ময়নাগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতের পরিবার। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, এনআরসি তালিকায় নাম না উঠলে কী হতে পারে, সেই আতঙ্কের থেকেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই ব্যক্তি। কিন্তু আদতেই কী এনআরসি আতঙ্ক নাকি ওই ব্যক্তির আত্মহত্যার পিছনে অন্য কোনও রহস্য আছে তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই নাগরিক পঞ্জিতে নাম না থাকলে কী হবে সেই আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছেন মুর্শিদাবাদের এক যুবক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.