ছবি: প্রতীকী
বিপ্লবচ্ন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: প্রতিবেশীর পারিবারিক গন্ডগোল ঠেকাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ গৃহবধূ। রবিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার ধুবুলিয়া টিবি হাসপাতাল কলোনি এলাকায়। খবর পেয়ে পুলিশ গেলে মৃতের পরিবারের সদস্যরা দেহ আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। শেষপর্যন্ত খুনিকে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়ে দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। জানা গিয়েছে, গৃহবধূর নাম রুমা সরকার ওরফে শেলি(২৩)। দেড় বছরের সন্তান কোলে থাকা অবস্থাতেই তাঁর মাথায় গুলি লাগে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে ছিটকে পড়েন তিনি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই গৃহবধূর।
রুমার পাশের বাড়িতে থাকেন স্বদেশ বিশ্বাস ও তাঁর দাদা সোমনাথ বিশ্বাস ওরফে রাজু।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ স্বদেশের সঙ্গে তার দাদা সোমনাথ ওরফে রাজুর গণ্ডগোল বাধে। রাজু তার ভাইকে দা দিয়ে কোপানোর চেষ্টা করছিলেন। পাল্টা ভাই স্বদেশও দা বের করে। গন্ডগোলের খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা ঠেকাতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় স্বদেশ দাদাকে মারার জন্য পিস্তল বের করে।
মৃত গৃহবধূর স্বামী প্রকাশ সরকার ওরফে গোবিন্দ জানান, “আমি ঠেকাতে গিয়েছিলাম। ও আমাকে পিস্তল দেখিয়ে খুনের হুমকি দেয়। আমার বাড়ির লোকজনও ওদের গন্ডগোল ঠেকাতে এগিয়ে এসেছিল। সেই সময় স্বদেশ ওই পিস্তল থেকে আমার স্ত্রীর মাথায় গুলি করে। ঘটনাস্থলেই আমার স্ত্রী মারা যায়।” তাঁর আরও অভিযোগ, “স্বদেশ একজন কুখ্যাত সমাজবিরোধী। ওর নামে কয়েকটি খুনের অভিযোগ রয়েছে। ও বাড়িতে জুয়ার বোর্ড চালায়। কিন্তু ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।”
জানা গিয়েছে, জুয়ার বোর্ডের টাকার ভাগাভাগি নিয়ে এদিন দুই ভাইয়ের মধ্যে গন্ডগোল বাধে। এদিন গৃহবধূকে খুনের বেশ কিছুক্ষণ পর পুলিশ আসে। কিন্তু ততক্ষণে স্বদেশ পালিয়ে যায়। মৃত গৃহবধূর শ্বাশুড়ি হীরা সরকার অভিযোগ করেন, “স্বদেশ একটা কুখ্যাত সমাজবিরোধী। এর আগেও তার বৌদিকে-সহ তিন-চারটে খুন করেছে। ওরা দুই ভাই গন্ডগোল করছিল। ছেলে এবং আমরা ঠেকাতে গিয়েছিলাম। স্বদেশ পিস্তল বার করে আমার ছেলের দিকে তাক করেছিল। এরপরেই আমার বৌমাকে গুলি করে খুন করে। আমি ওর ফাঁসি চাই।”
ওই খুনের ঘটনায় সোমবার সকালেও তীব্র উত্তেজনা রয়েছে এলাকায়।পুলিশ জানিয়েছে, খুনের অভিযোগে অভিযুক্তদের ধরার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ওই গৃহবধূকে লক্ষ্য করে কেন গুলি চালানো হল, এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.