দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: এক শিক্ষক ও শুভাকাঙ্খীর উদ্যোগে এবার বলিউডের সঙ্গীত জগতে পা রাখতে চলেছে হুগলির ইটাচুনা গ্রামের আদিবাসী কিশোরী চাঁদমণি হেমব্রম। ওই কিশোরীর কন্ঠে নেহা কক্করের ‘ও হামসফর’ গান ফেসবুকে পোস্ট করার পরই তা ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল। সেই গান শুনেই চাঁদমণির সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাবড় তাবড় শিল্পীরা। তাঁদের হাত ধরেই বলিউডে পাড়ি দিতে চলেছে কিশোরী।
ইটাচুনা গ্রাম পঞ্চায়েতের মুল্টি গ্রামের এই কিশোরী চাঁদমণি হেমব্রম সারদেশ্বরী কন্যা বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেনীর ছাত্রী। তিন বোনের মধ্যে চাঁদমনিই বড়। দশ বছর আগে বাবার মৃত্যুর পর কঠিন জীবনযুদ্ধে শামিল হতে হয় চাঁদমণিকে। সংসারের হাল ধরতে মা মালতী হেমব্রমের সঙ্গে মাঠে গিয়ে ধান রোয়ার কাজ করার পাশাপাশি পড়াশুনা চালিয়ে যেতে থাকে ওই কিশোরী। দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জুটত না, অথচ ছোট থেকেই রবীন্দ্রসঙ্গীত তার মনকে টানে। তাই পাশের বাড়িতে মিউজিক সিস্টেমে গান শুনে গুন গুন করত সারাক্ষণ।
তবে সাঁওতাল এই কিশোরীর এগিয়ে যাওয়ার পথে প্রথম থেকেই সাহায্য করে এসেছেন দুর্গাপুরের চিরঞ্জিত ধীবর ও হুগলির শ্যাম হাঁসদা। শ্যামবাবু ত্রাণ বিলি করতে এসে চাঁদমনির গান রেকর্ড করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেন। অন্যদিকে, দুর্গাপুরের স্কুল শিক্ষক চিরঞ্জিত ধীবর তাঁরই ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার করেন চাঁদমণির গান। সেই পোস্ট দেখেই চিরঞ্জিতবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন বলিউডের শিল্পীরা। ধীরে ধীরে ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করে সাঁওতাল কিশোরীর। অবশেষে পঞ্জাবের খ্যাতানামা শিল্পী আয়শান আদ্রির মিউজিক ডিরেকশানে মুক্তি পেতে চলেছে চাঁদমণির ‘জুদাইয়া বে’। গানটি লিখেছেন আরবান স্বরাজ। এই গানটি বড় কোনও মিউজিক কোম্পানি ও টিভি চ্যানেল দ্বারা প্রমোট করা হবে। জানা গিয়েছে, চিরঞ্জিতবাবুর মাধ্যমে ইন্ডিয়ান আইডল সিজন-১২ তে অংশ নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করা হয়েছে চাঁদমণির সঙ্গে। সব মিলিয়ে এক অন্যজগতের অপেক্ষায় চাঁদমণি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.