ধীমান রায়, কাটোয়া: সবে বৃহস্পতিবার শাসকদলের সাংগঠনিক স্তরে রদবদল হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য কমিটি, স্টিয়ারিং কমিটি থেকে দলের সমন্বয় কমিটি নতুন করে তৈরি হয়েছে। তার ২৪ ঘন্টা যেতে না যেতেই নতুন কমিটি নিয়ে ক্ষোভবিক্ষোভ শুরু হয়েছে দলের অন্দরে। পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের দলীয় কো-অর্ডিনেটর পদে ভাতারের বিধায়ক সুভাষ মণ্ডলকে দায়িত্ব দেওয়ার বিরোধিতায় শুক্রবার গুসকরা বাসস্ট্যান্ডে প্রতিবাদ সভা করেন তৃণমূলের একদল কর্মী, সমর্থক।
এদিনের প্রতিবাদ সভায় অংশ নেন আউশগ্রাম ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি শেখ সালেক রহমান, গুসকরা শহর তৃণমূল সভাপতি কুশল মুখোপাধ্যায়-সহ দলের শাখা সংগঠনের কয়েকজন। তাঁরা আউশগ্রাম এলাকায় দলের নেতৃত্বে অনুব্রত মণ্ডলের প্রতিই আস্থা রাখছেন। তাঁদের দাবি, দলের পর্যবেক্ষক পদে আউশগ্রাম বিধানসভা এলাকায় অনুব্রত মণ্ডল যেমন ছিলেন, তেমনই তাঁকে এই এলাকার সাংগঠনিক দায়িত্বে রাখতে হবে। অথচ বৃহস্পতিবারের তৃণমূলের সাংগঠনিক রবদবদলে ‘পর্যবেক্ষক’ পদটাই তুলে দেওয়া হয়েছে। ভাতারের বিধায়ক সুভাষ মণ্ডলকে তাঁরা কো-অর্ডিনেটর হিসাবে মানতে নারাজ বলে পরোক্ষভাবে জানিয়ে দিয়েছেন শেখ সালেক রহমানরা।
বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্ব দলের রাজ্যকমিটি সহ বিভিন্ন জেলার সাংগঠনিক কমিটি নতুন করে গঠন করেছেন। তাতে কিছু রদবদল ঘটেছে। কয়েকটি জেলার দলীয় সভাপতিদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে নতুন মুখ আনা হয়েছে। পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে দলের পর্যবেক্ষকের কোনও পদ রাখা হয়নি।
নতুন কমিটিতে দেখা যাচ্ছে, পূর্ব বর্ধমান জেলায় তৃণমূলের জেলা সভাপতি হিসাবে স্বপন দেবনাথকে বহাল রাখলেও, জেলার ১৬ টি বিধানসভা এলাকায় কো-অর্ডিনেটর হিসাবে ৩ জনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ভাতারের বিধায়ক সুভাষ মণ্ডলকে আউশগ্রাম, কেতুগ্রাম ও মঙ্গলকোট, ভাতার, মন্তেশ্বর, মেমারি বিধানসভা এলাকার কো-অর্ডিনেটর হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই ঘোষণার পর এদিন বিকেলে দেখা যায় গুসকরা বাসস্ট্যান্ডে তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় ব্লক নেতৃত্ব ও কর্মীসমর্থকরা মিলে সভা করে তার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
আউশগ্রাম ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি শেখ সালেক রহমান, গুসকরা শহর তৃণমূল সভাপতি কুশল মুখোপাধ্যায়রা বলেন, ” যদিও দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তবু আমরা চাই এই সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনা করা হোক। আমাদের এলাকার দলের দায়িত্বে অনুব্রত মণ্ডল যেমন ছিলেন তেমন ভাবেই অনুব্রত মণ্ডলের নেতৃত্বে আমরা দলের হয়ে কাজ করতে চাই। অনুব্রত মণ্ডলের নেতৃত্বেই আমরা এতদিন আউশগ্রাম এলাকায় সংগঠন করে আসছি। তাই আমরা দলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবিতেই এই সভা করেছি।”
এ নিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি তথা দলের রাজ্য সমন্বয় কমিটির সদস্য দেবু টুডু বলেন, ” দল যা ঠিক করে দিয়েছে, আমরা তা মানতে বাধ্য। তবে কেউ দলের কাছে দাবি জানাতেই পারেন।” দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আউশগ্রাম বিধানসভা এলাকায় সুভাষ মণ্ডলকে কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব দেওয়ায় দলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছে তৃণমূলের আরেকাংশের কর্মীরা। সুভাষবাবুর বিরুদ্ধে এই আংশিক বিরোধিতা নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।
ছবি: জয়ন্ত দাস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.