সৌরভ মাজি, বর্ধমান: মনোনয়ন পেশের সময়সীমা বাড়ানো নিয়ে আক্ষরিক অর্থেই রাতারাতি ভোল পালটেছে নির্বাচন কমিশন৷ ফলে বিভ্রান্তিও চরমে৷ বিজ্ঞপ্তি বাতিলের খবর না পেয়ে মঙ্গলবার সকালে বর্ধমান শহরে এসডিও অফিসে মনোনয়ন জমা দিতে চলে এসেছিলেন অনেকেই৷ বিরোধীদের অভিযোগ, প্রস্তুতি সেরে রেখেছিলেন শাসকদলের কর্মী-সমর্থকরাও৷ তাঁদের দাপটে প্রায় কেউ-ই মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি৷ রেহাই পাননি সেচ দপ্তরের কর্মী দেবাশিস মুখোপাধ্যায়ও৷ প্রার্থী ভেবে ছাপোষা ওই সরকারি কর্মীকেও রীতিমতো রাস্তা ফেলে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ৷
[পঞ্চায়েতে টালবাহানা, বিজেপির পর এবার সুপ্রিম কোর্টের পথে বামেরাও]
সোমবার রাতে মনোনয়ন পেশের সময়সীমা আরও একদিন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন৷ জারি হয় বিজ্ঞপ্তিও৷ মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে ৩টে পর্যন্ত এসডিও মনোনয়ন পেশ করা যাবে বলে জানানো হয়৷ কিন্তু, মঙ্গলবার সকালে আবার আচমকাই সেই বিজ্ঞপ্তি বাতিলও করে দেয় কমিশন৷ প্রতিবাদে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি৷ বিজ্ঞপ্তি বাতিলের সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ জারি করেছে আদালত৷ দিনভর কলকাতায় যখন বিজ্ঞপ্তি বাতিল নিয়ে তোলপাড় চলছে, তখন জেলার নেতা-কর্মীরা কার্যত অন্ধকারে৷ কমিশনে পুরনো নির্দেশ মেনে সকালেই বর্ধমানে এসডিও অফিসে মনোনয়ন জমা দিতে চলে এসেছিলেন বিরোধী দলের প্রার্থীরা৷ তবে মনোনয়ন অবশ্য একটিও জমা পড়েনি৷ বিরোধীদের অভিযোগ, সকাল থেকে বর্ধমান শহরের কার্জন গেট এলাকায় প্রশাসনিক ভবনের দখল নিয়ে নিয়েছিলেন শাসকদলের কর্মী-সমর্থকরা৷ প্রত্যেকেরই হাতে ছিল লাঠি৷ তাঁদের নজর এড়িয়ে এসডিও অফিসে ঢুকতেই পারেনি বিরোধীদলের প্রার্থীরা৷ যাঁরা মনোনয়ন পেশ করতে গিয়েছেন, তাঁদের বেধড়ক মারধর করা হয়েছে৷ আর এই রাজনৈতিক সংঘর্ষের মধ্যে মার খেয়েছেন এক ছাপোষা সরকারি কর্মচারীও!
[পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি তুঙ্গে, কলকাতার ধর্মতলা-কালীঘাটে সাজ সাজ রব]
সেচ দপ্তরের দামোদর ক্যানাল ডিভিশনে চাকরি করেন দেবাশিস মুখোপাধ্যায়৷ বাড়ি হুগলির চন্দননগরে৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনে বর্ধমানে পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি৷ মঙ্গলবার সকাল ১১টা নাগাদ ব্যাগ কাঁধে নিয়ে জেলাশাসকের দপ্তরের দিকে যাচ্ছিলেন দেবাশিস৷ অভিযোগ, শাসকদলে কর্মী-সমর্থকরা তাঁর পথ আটকান৷ ব্যাগে তল্লাশির পর অবশ্য দেবাশিস মুখোপাধ্যায়কে ছেড়ে দেন শাসকদলের কর্মী-সমর্থকরা৷ এরপর শাসকদলের এক কাউন্সিলর ফের দেবাশিসের পথ আটকান বলে অভিযোগ৷ পরিচয়পত্র দেখতে চান তিনি৷ আর তাতেই একটু বিরক্তি প্রকাশ করে ফেলেন সেচ দপ্তরের কর্মী দেবাশিস মুখোপাধ্যায়৷ ব্যস আর যায় কোথায়! অভিযোগ, তাঁকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করেন কাউন্সিলের অনুগামীরা৷ শেষপর্যন্ত শাসকদলের কয়েকজন কর্মীই দেবাশিসবাবুকে উদ্ধার করেন৷ যদিও বর্ধমানে সরকারি কর্মচারীদের হেনস্তার অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদলের স্থানীয় নেতারা৷ তাঁদের দাবি, যাঁরা এই কাজ করেছে, তাঁরা দলের কেউ নয়৷ সকলেই দুষ্কৃতী৷
ছবি: মুকুলেসুর রহমান
[দাদা প্রার্থী জেলা পরিষদে, বোন পঞ্চায়েত সমিতিতে
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.