সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: নিখোঁজ হয়ে যাওয়া কিশোরীকে বিহারের একটি চটুল নাচের ঠেক থেকে উদ্ধার করল পুলিশ। অন্তত চার মাস আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার রবীন্দ্রনগর থানা এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় সে। ভিনরাজ্য থেকে উদ্ধার হওয়া ওই নাবালিকাকে রবিবার থানায় নিয়ে আসা হয়। তাকে পাচারের ঘটনায় অভিযুক্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে পাচারচক্রের দুই পাণ্ডা এখনও ফেরার।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ১৩ মে রবীন্দ্রনগর থানার ষোলো বিঘা রেলবস্তির বাসিন্দা এক নাবালিকা হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যায়। কিশোরীর বাবা পেশায় রিক্সাচালক এবং মা পরিচারিকার কাজ করেন। ছয় সন্তানের বাবা-মা ওই দম্পতির সংসারে অভাব অনটন লেগেই রয়েছে। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দম্পতির মেয়েকে সাত হাজার টাকার বিনিময়ে বিহারের মতিহার এলাকার একটি নাচের ঠেকে বিক্রি করে দিয়েছিল এক পাচারকারী দল। কিশোরীর পরিবারের দাবি, ওই নাবালিকার প্রতিবেশী সন্তোষপুরের বিধাননগর এলাকার বাসিন্দা। নাবালিকাকে কাজের লোভ দেখিয়ে বাড়ি থেকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। তারপর তাকে বিহারের মতিহারে একটি চটুল নাচের ঠেকে বিক্রি করে দেওয়া হয়।
মেয়েকে ফেরত পেতে রবীন্দ্রনগর থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন কিশোরীর মা। এরপরই তদন্তে নামে পুলিশ। আটক করা হয় ওই কিশোরীর প্রতিবেশীকে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, ওই নাবালিকাকে মাত্র ৭ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। বিহারের মতিহারে একটি চটুল নাচের ঠেকের মালিকের কাছে তাকে বিক্রি করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের এক বিশেষ দল পুলিশ আধিকারিক চিরঞ্জীব বিশ্বাসের নেতৃত্বে কিশোরীর প্রতিবেশীকে সঙ্গে নিয়ে মতিহারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। শনিবারই ওই চটুল নাচের আসর থেকে পাচার হয়ে যাওয়া নাবালিকাকে উদ্ধার করে পুলিশ।
এই ঘটনায় পুলিশ মণিকা দাস, ফিরোজা খাতুন, সোনালাল রাম এবং মুকেশ সানি নামে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রত্যেকেরই বয়স ২০-২২ বছরের মধ্যে। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৩ এবং ৩৬৫ ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তবে পাচারচক্রের দুই পাণ্ডা প্রদ্যুৎমান যাদব ও পূজা দেবীকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.