সৌরভ মাজি, কালনা : সাইকেল নিয়ে সটান থানায় হাজির এক খুদে। পুলিশের কাছে তার কাতর আর্তি “আমার বাবা-মা মারা গিয়েছে। আমি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছি। আমাকে কাজ দিন।”
শনিবার দুপুরে এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল বর্ধমান থানার পুলিশকর্মীরা। কিশোরীর আচরণে ঘর ছেড়ে থানার বাইরে চলে আসেন আইসি তুষারকান্তি কর। আসেন অন্য আধিকারিকরাও। খুদের কান্না ও কথাবার্তা শুনে তাঁরা নিশ্চিত হন কোথাও একটা গোলমাল হচ্ছে। তাকে শান্ত করেন পুলিশ আধিকারিকরা। আইসির নির্দেশে চকলেট, মিষ্টি আনা হয় তাকে। তাকে বসিয়ে চকলেট-মিষ্টি খাইয়ে তাঁর সঙ্গে ভাব জমিয়ে ফেলেন তাঁরা। প্রথমে ‘কেউ নেই’ বললেও কিছুক্ষণ পরেই পুলিশ কাকুদের আহ্লাদ পেয়ে সত্যি বলতে শুরু করে সে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িতে বকাবকি করেছিল ওই নাবালিকাকে। সেই কারণেই সটান সে থানায় হাজির হয়েছিল বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ নিয়ে। জানা গিয়েছে, সম্ভবত পরিবারের কাছে কিছু একটা চেয়েছিল ওই কিশোরী, তাতে সম্মতি দেননি বাবা-মা। আর তাই মাথা চাড়া দেয় চাকরির ভূত। অগত্যা পথ না পেয়ে চাকরি খুঁজতে হাজিয় হন পুলিশের দরবারে। এরপর বিষয়টি বুঝতে পেরে কিশোরীকে ভুলিয়ে তার পরিচয়, নাম ঠিকানা ও ফোন নম্বর জেনে নেন পুলিশ আধিকারিকেরা। বাড়িতে ফোন করা হলে কিশোরীর মা এসে মুচলেকা দিয়ে মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যান।
জানা গিয়েছে, ওই কিশোরী বর্ধমানের গোলাপবাগের বাসিন্দা। একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর পড়ুয়া সে। এদিন সকালে বাড়িতে তাঁকে বকাবকি করা হয়েছিল। সেই রাগেই সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পড়ে খুদে। তারপর সটান থানায় হাজির হয়। নালিশ জানাতে। তবে সব শেষে মেয়েকে ফিরে পেয়ে পুলিশকে কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি খুদে চাকরীপ্রার্থীর মা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.