ছবি: প্রতীকী।
অরূপ বসাক, মালবাজার: সরস্বতী পুজোয় বাড়ি থেকে বেড়াতে যেতে বারণ করেছিলেন মা৷ সেই অভিমানে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী৷ তুচ্ছ বিষয়ে যে নিজের জীবন দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নেবে কিশোরী, তা ভাবতে পারেননি পরিবারের কেউই৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোকের ছায়া মালবাজারের রাজডাঙার নতুন বসতি এলাকায়৷
মালবাজারের রাজডাঙার নতুন বসতি এলাকায় দু’দিন ধরে উরুস উৎসব চলছে৷ পড়াশোনা শিকেয় তুলে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে ওই উৎসবে মেতেছিল নিসু বেগম নামে ওই ছাত্রী৷ রবিবার সরস্বতী পুজো উপলক্ষে বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল সে৷ মায়ের একটি শাড়িও বেছে রেখেছিল নিসু৷ পাশের বাড়ির এক বউদিকে শাড়ি পরিয়ে দেওয়ার জন্য বলেছিল ছাত্রী৷ কিন্তু আচমকাই রবিবার ওই ছাত্রীর বাড়িতে কয়েকজন আত্মীয়স্বজন চলে আসেন৷ নিসুকে তাই তাঁর মা বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে যেতে বারণ করেন৷ জেদ করলেও বেড়াতে যেতে দেননি ছাত্রীর মা৷ এরপর ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে টিভি দেখতে বসে নিসু৷ দীর্ঘক্ষণ কেটে গেলেও মেয়ের সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা ঢেলে ঘরের ভিতর ঢোকেন ছাত্রীর মা৷ ঘরে ঢুকে অবাক হয়ে যান তিনি৷ দেখেন, গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে সিলিং থেকে ঝুলছে নিসু৷ চিৎকার চেঁচামেচি শুনে বাড়ির অন্যান্য লোকজন এবং পাড়া প্রতিবেশীরা জড়ো হয়ে যান৷ তড়িঘড়ি নিসুকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় ওদলাবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে৷ কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ৷ চিকিৎসকরা ওই ছাত্রীকে মৃত বলেই জানান৷
ছাত্রীর কাকা সাহেবুল আলম বলেন, ‘‘বউদি নিসুকে সরস্বতী পুজোয় বেড়াতে যেতে বারণ করেছিলেন৷ তা বলে সে যে এত বড় কাণ্ড ঘটাবে তা বুঝতে পারিনি কেউই৷’’ তুচ্ছ কারণে মেয়ের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না ছাত্রীর মা৷ নিজের স্থির রাখতে পারছেন না তিনি৷ ভেজা চোখে বলেন, ‘‘দু’দিন ধরে এলাকায় চলা উরুস উৎসবের জন্য মেয়ে একটুও পড়াশোনা করেনি৷ তার উপর রবিবার আবার বাড়িতে আত্মীয়স্বজন আসার কথা ছিল৷ তাই মেয়েকে বলেছিলাম বেড়াতে যেতে হবে৷ অভিমানে আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে বুঝতে পারলে তা বলতাম না৷’’ এই ঘটনার পর থেকে থমথমে রাজডাঙার নতুন বসতি৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.