সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: জঙ্গলের ভিতর অবৈধ প্রবেশ রুখতে গিয়ে মৎজীবীদের হাতে হেনস্তার শিকার এক বনাধিকারিক৷ ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার রামগঙ্গার ধনচির জঙ্গলে৷ নিগৃহীত বিট অফিসার বিমল মাইতিকে হাসপাতালে ভরতিও করা হয়। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত তিনি৷ কাজে যোগ দিতেও ভয় পাচ্ছেন ওই আধিকারিক৷
বনদপ্তর সূত্রে খবর, কোনও বৈধ কাগজ ছাড়া ধনচির জঙ্গলে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ। ওই এলাকায় মাছ ও কাঁকড়া ধরতে গেলে সরকারি অনুমতি নেওয়া বাঞ্ছনীয়৷ এমনতী ওই এলাকায় ছোট মাছ ধরাও নিষিদ্ধ৷ তা সত্ত্বেও নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মাঝেমধ্যেই মৎস্যজীবীরা ধনচির জঙ্গলে ঢুকে পড়েন৷ অবৈধ প্রবেশকারীদের রুখতে তাই ওই এলাকায় তল্লাশি চালায় বনদপ্তর। সোমবার বিকেলেও গোপনসূত্রে বেআইনি প্রবেশের খবর পান বিট অফিসার বিমল মাইতি৷ খবর পেয়েই বনকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ধনচির জঙ্গলে যান তাঁরা। আধিকারিকদের দাবি, সেই সময় জঙ্গলে মাছ এবং কাঁকড়া ধরছিলেন ৪০-৪৫ জন মৎস্যজীবী। বিট অফিসার ওই মৎস্যজীবীদের কাছে বৈধ কাগজপত্র দেখতে চান। তখনই দু’পক্ষের তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়৷ মৎস্যজীবীরা ওই বিট অফিসারকে মারধর করে৷ অন্যান্য বনকর্মীরাও হামলার হাত থেকে রক্ষা পাননি৷
মৎস্যজীবীদের মারে গুরুতর জখম হন বনাধিকারিক৷ রাতেই তাঁকে পাথরপ্রতিমা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হলেও, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ওই আধিকারিক৷ বর্তমানে তিনি নামখানায় নিজের বাড়িতেই রয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত এই ঘটনায় পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। এর আগে গত এপ্রিলে চোরাশিকারীদের পাকড়াও করতে গিয়ে রাতের অন্ধকারে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মইপিঠে গ্রামবাসীদের রোষের শিকার হন ডিএফও-সহ আট বনকর্মী৷ গ্রামবাসীরা বেধড়ক মারধর করতে শুরু করেন তাঁদের৷ হামলার জেরে মাথা ফেটে যায় প্রত্যেকের৷ পাঁজর ভেঙে যায় ডিএফও-র৷ হাসপাতালেও ভরতি করা হয় তাঁদের৷ সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও আক্রান্ত হলেন বনাধিকারিক৷ বারবার বনাধিকারিকদের মারধরের ঘটনায় বড়সড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে নিরাপত্তা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.