Advertisement
Advertisement

Breaking News

শিশু

শিশুর পেটে ‘শিশু’! বিরল, জটিল অস্ত্রোপচারে সাফল্য বর্ধমানের চিকিৎসকদের

৫ লক্ষ শিশুর মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে এমনটা ঘটতে পারে।

A foetus is found within a child’s belly, surgery done at Burdwan
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:April 11, 2019 9:51 pm
  • Updated:April 11, 2019 9:51 pm  

সৌরভ মাজি, বর্ধমান: এক বছর আট মাসের শিশুর পেটে ২ বছর ৫ মাসের অপরিণত ‘শিশু’! শুনে চমকে গেলেও বৃহস্পতিবার এমনই বিরল ঘটনার সাক্ষী রইল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই শিশুর পেট থেকে বের করা হয় অপরিণত অবস্থায় থাকা ওই ভ্রূণ।

হাসপাতালে চিকিৎসক নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, এটি বিরল ঘটনা। ৫ লক্ষ শিশুর মধ্যে মাত্র এক জনের ক্ষেত্রে এমনটা ঘটতে পারে। নরেন্দ্রনাথবাবু বলেন, “চিকিৎসা পরিভাষায় এই ধরণের ঘটনাকে বলা হয় ফিটাস ইন ফিটু।” তিনি আরও জানান, চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই ধরণে ঘটনা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। একটি মতে বলা হয়, মায়ের পেটে যমজ শিশুর ভ্রূণ তৈরি হচ্ছিল। তার মধ্যেই একটি অন্যটির ভিতরে থেকে যায়। ফলে যে কোনও একটি পরিপূর্ণ অবস্থায় বিকাশের সুযোগ পায় না। আবার অন্য মতে বলা হয়, এটি একটি বিশেষ অস্বাভাবিক ঘটনা, যেখানে টিউমারের মত এই ধরণের মাংসপিণ্ড গড়ে ওঠে।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: মূর্তি ছেড়ে গ্রেনেড! মডেল অস্ত্র তৈরিতে ব্যস্ত কাটোয়ার ডোকরা শিল্পীরা ]

বীরভূমের নানুর থানার পাকুরহাস গ্রামের বলরাম মাঝি ও লক্ষ্মী মাঝির একমাত্র পুত্রসন্তান দেবনাথ মাঝি। গত ২৩ মার্চ আউটডোরে ওই শিশুকে দেখেন চিকিৎসক নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়৷ তাঁর সন্দেহ হয়, ফিটাস ইন ফিটু বলেই। দেবনাথের পেটে হাত দিয়ে ভিতরে থাকা পিণ্ডের মধ্যে হাড়ের উপস্থিতি টের পান তিনি। তখনই ভরতি করে নেওয়া হয় শিশুটিকে। তারপর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। সিটি স্ক্যান করার পর এই বিষয়ে নিশ্চিত হন তিনি। বৃহস্পতিবার অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের জন্য মোট ১০ জনের টিম তৈরি হয়েছিল। অ্যানেস্থেশিয়ার জন্যও ১০ জনের টিম ছিল এদিন। প্রায় দু’ঘণ্টা অস্ত্রোপচারের পর সাফল্যের সঙ্গে শিশুটির পেট থেকে ওই অপরিণত ভ্রূণটি বের করা হয়। তাতে শিশুর হাত-পা, মাথার উপস্থিতি টের পাওয়া যাচ্ছে। চিকিৎসক জানান, দেবনাথের বয়স ১ বছর ৮ মাস। সে মাতৃগর্ভে ৯ মাস ছিল। সেই হিসেবে তার পেট থেকে বের করা ওই অপরিণত শিশুর বয়স ২ বছর ৫ মাস।

দেবনাথের বাবা বলরাম মাঝি চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানান। তিনি জানান, গত ছ’মাস ধরে ছেলের পেটটি ফোলা ফোলা লাগত। হাত দিলে শক্ত মাংসপিণ্ড জমেছে বলে বুঝতে পারতেন। তবে দেবনাথ হেসেখেলেই বেড়াত৷ কোনও যন্ত্রণা বা শারীরিক সমস্যা কিছু ছিল না। চিকিৎসক নরেন্দ্রনাথবাবু জানান, শিশুটি ৫-৭ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে যাবে। আপাতত পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে তাকে। তবে এই প্রথম নয়, বছর পাঁচেক আগে তিনি এই হাসপাতালেই আর এক শিশুর পেট থেকে ফিটাস ইন ফিটু অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বের করেছিলেন। তার আগে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে থাকাকালীন সময়েও একটি শিশুর পেট থেকে ফিটাস ইন ফিটু বের করেছিলেন অস্ত্রোপচার করে। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই এবারও মিলল সাফল্য৷

[ আরও পড়ুন: ভোট লুঠে সহযোগী পুলিশদের সাসপেন্ড করুক কমিশন, দাবি রাহুল সিনহার ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement