Advertisement
Advertisement
কোয়ারেন্টাইনে বংশীবাদক

সন্ধে হলেই কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রে সুরের মূর্ছনা, ঘরে ফেরার গান শোনাচ্ছেন বন্দি বাঁশিওয়ালা

সুরেলা জাদুতে মুগ্ধ কোয়ারেন্টাইনের মানুষজনেরা। দেখুন ভিডিও।

A flute player's tune re leaves Asansole quarentine centre
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:June 13, 2020 6:39 pm
  • Updated:June 13, 2020 6:39 pm  

চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: সন্ধে হলেই সুরের মূর্ছনায় যেন ডুব দিচ্ছে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার। বাঁশির সুরে ‘ঘরে ফেরার গান’ শোনাচ্ছেন বংশীবাদক। যেন এই বন্দিজীবন থেকে মুক্তি পেতে চাইছেন। লখনউতে অনুষ্ঠান করতে গিয়ে লকডাউনের জেরে ৩ মাস আটকে ছিলেন। বাড়ি ফিরতে পারেননি বংশীবাদক শিল্পী শ্যামল চক্রবর্তী। বহু কষ্টে পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেনে নিজের শহরে ফিরলেও বাড়িতে ঢোকার সৌভাগ্য এখনও হয়নি তাঁর। ঠাঁই হয়েছে আসানসোলের এইচএলজি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে।

বাঁশির সুরে সুরে মনের আকুল বেদনার কথাই তুলে ধরছেন শিল্পী। কখনও বাঁশির সুরে বেজে উঠছে ‘আমি গাই ঘরে ফেরার গান’, তো কখনও বেজে উঠছে ‘একলা চলো রে’। লখনউয়ের বারাবাঙ্কিতে উচ্চাঙ্গ সংগীত উৎসবের ডাক পেয়ে গত ১৪ মার্চ আসানসোল থেকে রওনা হয়েছিলেন বছর পঞ্চাশের শ্যামল চক্রবর্তী। তিনি একজন পেশাদার বংশীবাদকও বটে। দেশের বিভিন্নপ্রান্তের অনুষ্ঠানে বাঁশি বাজান। পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাশিয়ার সঙ্গেও সঙ্গত হিসাবে বাঁশি বাজিয়েছেন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইনাল ইয়ারের পড়ুয়াদের বিকল্প পথে পরীক্ষা নেওয়ার ভাবনা রাজ্যের]

লখনউতে ১৬ মার্চ অনুষ্ঠান শুরু হয়। শেষ হওয়ার কথা ছিল ২৪ মার্চ। কিন্তু অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগেই লকডাউন ঘোষণা হল। অতঃপর নবাবের শহরেই আটকে পড়েন শ্যামলবাবু। অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের সাহায্য নিয়ে সেখানে এতদিন কাটিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেনে আসানসোলে ফিরেছেন দিন দশেক আগে। ভিন রাজ্য থেকে ফিরেছেন। ফলে, বাড়ি ঢোকা হয়নি! বদলে, ঠাঁই হয়েছে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে। সোয়াব টেস্ট হলেও এখনও রিপোর্ট আসেনি। উদ্বিগ্ন শ্যামলবাবু তাই এখনও আটকে। ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বাঁশিকেই সঙ্গী করেছেন তিনি।

বংশীবাদকের বাঁশির সুরের মোহনীয় জাদুতে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মী এবং কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে থাকা মানুষজনেরাও। শ্যামলবাবু কাঁদো কাঁদো স্বরে বললেন, “দীর্ঘদিন ঘরের বাইরে রয়েছি। ঘরে ফেরার জন্য মন ব্যাকুল হয়ে রয়েছে। ভগবানের কাছে প্রার্থনা করছি, রিপোর্ট যেন করোনা পজেটিভ না হয়। সুস্থ শরীরে যেন বাড়ি ফিরে যেতে পারি।” মন যে তাঁর ভারাক্রান্ত তা বোঝা যায়, যখন সন্ধে হলেই বাঁশিতে রাগাশ্রয়ী সুরে বেজে উঠছে ‘এক রাধা এক মীরা’ কিংবা বাঁশি বেজে উঠছে মহীনের ঘোড়াগুলির সেই খ্যাতনামা গান “ফিরবো বললে ফেরা যায় নাকি, পেরিয়েছ দেশ-কাল জানো নাকি এসময়? এখনও সামনে পথ হাঁটা বাকি চাইলেও দিতে পারবেনা ফাঁকি নিশ্চয়…।”

[আরও পড়ুন: শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন থেকে উদ্ধার বিপুল পরিমাণ সোনা, ধৃত দিল্লি ফেরত রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement