দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: ফের সুন্দরবনের জঙ্গলে বাঘের হামলার শিকার দুই মৎস্যজীবী। পরিজনের কথা ভেবে দু’পয়সা উপার্জন করতে গিয়ে প্রাণই খোয়াতে হল। সুন্দরবনের কালিরচর জঙ্গলের এই ঘটনায় এক মৎস্যজীবীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করেছেন বনদপ্তরের কর্মীরা। তবে আরেকজনের দেহ এখনও পাওয়া যায়নি। আদৌ ওই মৎস্যজীবী বেঁচে রয়েছেন নাকি প্রাণ গিয়েছে তাঁরও, সেই দোলাচলে আপাতত দিন কাটাচ্ছেন নিখোঁজ মৎস্যজীবীর পরিবার। একই গ্রামের দুই মৎস্যজীবীর মর্মান্তিক পরিণতির ফলে গোটা গ্রামেই নেমেছে শোকের ছায়া। কান্নার শব্দে ভারী গোটা এলাকা।
সরকারি অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনের জঙ্গলে শম্ভু মণ্ডল ও রাধা আউলিয়া নামে ওই দুই মৎস্যজীবী কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন। অন্যবার স্বপন মণ্ডল নামে আরও এক মৎস্যজীবী সঙ্গে থাকলেও এবার তিনি অসুস্থতার কারণে জঙ্গলে যেতে পারেননি। তাই বুধবার এই দুই মৎস্যজীবী জঙ্গলে যান। গভীর বনের ভিতর প্রথমে বাঘ আক্রমণ করে রাধা আউলিয়াকে। তাঁকে বাঘ নিয়ে যাচ্ছে দেখে সঙ্গী শম্ভু মণ্ডল বাঁচানোর চেষ্টা করেন। বাঘ এরপর আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। শম্ভু মণ্ডলকে টেনে নিয়ে চলে যায়। জখম রাধা কিছুতেই তাঁর সঙ্গীর প্রাণরক্ষা করতে পারেননি। এরপর ওই এলাকায় বনদপ্তরে একটি টহলদারি বোর্ড দুই মৎস্যজীবীর চিৎকার শুনে ছুটে যায়। বনকর্মীরা দেখেন রাধা আউলিয়ার নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। তাঁর দেহ উদ্ধার করেন বনদপ্তরের কর্মীরা। তবে শম্ভু মণ্ডলের দেহ এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
নিহত দুই মৎস্যজীবী গোসাবার বাসিন্দা। দুই মৎস্যজীবী বৈধ অনুমতিপত্র নিয়ে সুন্দরবনের জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন বলে দাবি তাঁর পরিজনদের। একই গ্রাম থেকে দুই মৎসজীবীকে এইভাবে বাঘ নিয়ে যাওয়ায় শোকের ছায়া নেমেছে এলাকায়। নিহতের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে গোসাবা থানার পুলিশ। তাঁকে শেষ দেখার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন রাধা আউলিয়ার পরিজনেরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.