দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: পেটের দায় বড় বালাই। তাই তো প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই পীরখালির জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন মৎস্যজীবী। কিন্তু বাড়ি ফেরা হল না সুন্দরবনের (Sundarbans) জেমসপুর এলাকার বাসিন্দার। নৌকা থেকেই বাঘে টেনে নিয়ে যায় তাঁকে। মৎস্যজীবীকে ফেলে রেখে জঙ্গল থেকে পালিয়ে আসেন তাঁর সঙ্গীরা। বনদপ্তরের কর্মীরা খবর পাওয়ামাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। তবে এখনও মৎস্যজীবীর দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
শনিবার সকালে তিনজন মৎস্যজীবী দল বেঁধে পীরখালির জঙ্গলে যান কাঁকড়া ধরতে। আর তখনই মানোয়ার মণ্ডল নামে বছর পঁয়ষট্টির এক মৎস্যজীবীর উপর বাঘ হামলা চালায়। বাঘ নৌকা থেকে ওই মৎস্যজীবীকে টেনে নিয়ে যায়। প্রায় চোখের সামনেই বাঘের হামলায় প্রাণহানি হয় মৎস্যজীবীর। তবে দেহটি উদ্ধার করতে পারেননি সঙ্গীরা।
বাঘের হামলার সময় নৌকায় ছিলে আরও দুই সঙ্গী। তবে তাঁরাও কোনওভাবেই মৎস্যজীবীকে বাঁচাতে পারেননি। সরকারি অনুমতি ছাড়াই তাঁরা কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন বলেই জানা গিয়েছে। খবর পাওয়ামাত্রই বনদপ্তরের কর্মীরা পীরখালির জঙ্গলে পৌঁছেছেন। মৎস্যজীবীর দেহ উদ্ধারের চেষ্টা করছেন। তবে এখনও দেহটি উদ্ধার করা যায়নি।
গত সপ্তাহেই চিতুরির জঙ্গলেও বাঘের হামলায় প্রাণ যায় এক মৎস্যজীবী। সরকারি অনুমতি ছাড়াই কাঁকড়া ধরতে গিয়েই মৃত্যু হয় তাঁর। গোষ্ঠ নাইয়া নামে ওই মৎস্যজীবীকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে জঙ্গল ছেড়ে গ্রামে ফিরে আসেন তাঁর সঙ্গীরা। গ্রামে এসে গোটা ঘটনা জানান তাঁরা। এরপরই গ্রামবাসীরা দল বেঁধে জঙ্গলে হানা দেয়। প্রায় আধখাওয়া অবস্থায় বাঘের মুখ থেকে টেনে আনা হয় গোষ্ঠ নাইয়াকে। তবে তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এদিকে, মানুষের রক্তের স্বাদ পাওয়া বাঘ তাতে খেপে যায়। মুখের শিকার হাতছাড়া হয়ে যাওয়ায় রাতভর চিতুরির জঙ্গলে হুংকার দিতে থাকে সে। বাঘের কার্যকলাপে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে গোটা গ্রাম। সেই ঘটনার পর সপ্তাহখানেক যেতে না যেতেই এবার পীরখালিতে প্রাণ হারালেন আরও এক মৎস্যজীবী। এই নিয়ে গত কয়েকদিনে বাঘের আক্রমণে নিহত হলেন তিন মৎস্যজীবী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.