Advertisement
Advertisement
Fake journalist

বনদপ্তরে চাকরি দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণা, গ্রেপ্তার ভুয়ো সাংবাদিক

ওই ভুয়ো সাংবাদিকের এক সহযোগীকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

A fake journalist arrested in Purulia । Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:August 12, 2021 9:34 am
  • Updated:August 12, 2021 9:34 am  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: নিজেকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক বলে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন নেতা-মন্ত্রী সহ প্রভাবশালী মানুষজনের সঙ্গে ছবি দেখিয়ে বিশ্বাস অর্জন। আর এই ভাবেই চাকরির টোপ দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার ছক। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। বনদপ্তরের (Forest Department) ভুয়ো মেল বানিয়ে সেখান থেকে নিয়োগপত্র দিয়ে পুলিশের জালে ধরা পড়ে গেল ভুয়ো সাংবাদিক। আদতে সে ভাড়া গাড়ির চালক। ওই ভুয়ো সাংবাদিক-সহ তার সাগরেদকেও পাকড়াও করেছে পুলিশ। পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ মঙ্গলবার রাতে তাদেরকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই ভুয়ো সাংবাদিকের (Fake Journalist) নাম অমিত সেন। তার বাড়ি পুরুলিয়া পুর শহরের সাত নম্বর ওয়ার্ডের উদ্ধব চন্দ্র সিনহা স্ট্রিটে। তার সঙ্গী রাজা চক্রবর্তীর বাড়ি পুরুলিয়া পুর শহরের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের নিমটাড় এলাকায়। বুধবার তাদেরকে পুরুলিয়া আদালতে তোলা হলে  ৬ দিনের পুলিশ হেফাজত হয়। পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের জেরা করে ঘটনার তদন্ত চলছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: পাহাড়ের রাজনীতিতে নয়া মোড়, প্রায় ৪ বছর পর ফের মুখোমুখি Binay Tamang ও Bimal Gurung]

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভুয়ো সাংবাদিক সেজে ওই ধৃত যুবক মাঝে মধ্যেই অযোধ্যা পাহাড়ে যেত। নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে খবর করার অভিনয় করত। নেতা-মন্ত্রীদের ছবি দেখিয়ে বোঝাতে চাইত তার নেটওয়ার্কের ব্যাপ্তি কতটা। শাসক দলের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি এমনকি প্রশাসনের অনুষ্ঠানেও দেখা যেত। এভাবেই ২০২০ সালে অযোধ্যা হিলটপের বাসিন্দা অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলাপ হয় তার। তারপর তাঁকে বনদপ্তরের চাকরির টোপ দিয়ে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ধাপে ধাপে হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ। তাকে বনদপ্তরের ভুয়ো মেল বানিয়ে wbforestsec. [email protected] থেকে নিয়োগপত্রও দেয়।

এরপরেই পুরুলিয়া শহরের নিমটাড় এলাকার বাসিন্দা রাজা চক্রবর্তীর সঙ্গে দেখা করতে বলে ওই ভুয়ো সাংবাদিক। অপূর্ব তার সঙ্গে দেখা করলে তাঁকে বলা হয় পশ্চিম মেদিনীপুরের পিড়াকাটা রেঞ্জ কার্যালয়ে কাজে যোগ দিতে। সেই মোতাবেক ওই নিয়োগপত্র নিয়ে রেঞ্জ কার্যালয় গেলে অপূর্বকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ফলে হতবাক হয়ে যান অপূর্ব। কাজে যোগ দেওয়ার জন্য ওই রেঞ্জ কার্যালয়ের পাশের হোটেলে টানা এক মাস ছিলেন তিনি। ২০২০ সালের ডিসেম্বরের শেষে তিনি মেদিনীপুর থেকে পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের বাড়িতে ফিরে আসেন। এরপর ওই দুই প্রতারকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন।

এদিকে ওই নিয়োগপত্র ঘিরে বনদপ্তরের মেদিনীপুর রেঞ্জ পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ওই এলাকার বনদপ্তরের মুখ্য বনপাল ও পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট সেল নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়টি পুরুলিয়া ডিভিশনের কাছ থেকে বিস্তারিত জানতে চায়। কারণ ওই নিয়োগপত্র পুরুলিয়া বনবিভাগের তরফ থেকে দেওয়া হয় বলে সেখানে উল্লেখ ছিল। পরে পুরুলিয়া বনবিভাগের ডিএফও সমগ্র বিষয়টি চলতি বছরের ৫ মে চিঠি দিয়ে পুলিশ সুপারকে জানান। ওই চিঠির ভিত্তিতে জেলা পুলিশ সুপার এই ঘটনায় ডিস্ট্রিক্ট এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের ডিএসপিকে অনুসন্ধান করে রিপোর্ট দিতে বলে। সেই প্রেক্ষিতে গত ৩০ জুলাই একটি রিপোর্ট দেন ডিএসপি এনফোর্সমেন্ট সমীর অধিকারী।ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে গত রবিবার পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ অমিত সেন, রাজা চক্রবর্তী এমনকি চাকরি পেতে যিনি টাকা দিয়েছিলেন সেই অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের নামেও অভিযোগ করে। প্রতারণা ও জালিয়াতির একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়।

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement