Advertisement
Advertisement
বিনা পারিশ্রমিকে শিক্ষকতা

১৬ বছর ধরে বিনা পয়সায় ছাত্র পড়ান পুরুলিয়ার এই শিক্ষক

আজীবন শিক্ষকতাই করবেন সুবলবাবু।

A elderly man teach students for last 16 years without salary
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:September 4, 2019 8:30 pm
  • Updated:September 4, 2019 9:08 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বেতন বৃদ্ধির দাবিতে যখন রাস্তায় নেমেছেন শিক্ষকরা। সেই উত্তাল সময়ে ঠিক উলটো ছবি পুরুলিয়ায়। টানা ১৬ বছর বিনা পারিশ্রমিক ছাড়াই ছাত্র পড়িয়ে আসছেন অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষক। নিয়মিত রুটিন মেনে স্কুলে হাজির হন তিনি। তিনি রাষ্ট্রপতি বা শিক্ষারত্ন পুরস্কার না পেলেও শিক্ষাজগতে তাঁর ভূমিকা এক উজ্বল দৃষ্টান্ত।

[আরও পড়ুন: চাঁদের আরও কাছে চন্দ্রযান ২, অবতরণের সাক্ষী থাকার সুযোগ পেল বাংলার মেয়ে উসরা]

ওই শিক্ষকের নাম সুবলচন্দ্র নন্দী। কাশিপুরের ন’পাড়ার বাসিন্দা। বয়স প্রায় ছিয়াত্তর। কিন্তু চেহারায় যেন তরতাজা যুবক। এখনও শরীরে বাসা বাঁধেনি কোনও রোগ। তাই পড়ুয়াদের জন্যই নিজেকে সঁপে দিয়েছেন সুবলবাবু। বিগত ছাপান্ন বছর ধরে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত তিনি। আগে কাশিপুরের রঙিলাডি গোপালচক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করতেন। অবসর নেওয়ার পর ন’পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে আসছেন। আজ থেকে ১৬ বছর আগে রঙিলাডি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবসর নেওয়ার পর ফের শিক্ষকতাকেই বেছে নেন তিনি। তাঁর সিদ্ধান্তে বরাবরই পাশে পেয়েছেন পরিবারকে। এরপর তিনি নিজেই ন’পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগাযোগ করেন। ফের ছাত্র পড়ানোর কাজে অবতীর্ণ হন সুবলবাবু। তাঁকে পেয়ে খুশি স্কুল কর্তৃপক্ষও।

Advertisement

ন’পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় তিনশো। সুবলবাবুকে নিয়ে শিক্ষক রয়েছেন ন’জন। উনি মূলত তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস নিয়ে থাকেন। ওই স্কুলের শিক্ষক কাজল কর বলেন, “উনি আমাদের সকলের স্যার। তিনি আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগ দেওয়ার
পর তাঁর গাইডলাইন মেনেই আমাদের এই স্কুল চলছে। আমাদের কোনও ভুলভ্রান্তি হলে তিনি রীতিমত পড়ুয়াদের মতোই শাসন-বকাবকি করে আমাদের শুধরে দেন।” স্কুলে ছবি আঁকা সংক্রান্ত কোনও কাজ হলেই সবার প্রথমে সকলেই সুবল স্যারের কাছে যান।

subal-2
বইয়ে মগ্ন সুবলবাবু।

[আরও পড়ুন:রামের পর বাঁকুড়ায় বলরাম পুজোর আয়োজন বিজেপির, পালটা খোঁচা তৃণমূলের]

সুবলবাবুর কথায়, “এই স্কুলের সকল শিক্ষকদের ডিগ্রি আমার চেয়ে অনেক বেশি। আমি সেই সময়ের স্কুল ফাইনাল পাশ। কিন্তু স্কুলের শিক্ষকরা সকলেই আমার পরামর্শ নেয়। এটা খুবই ভাল লাগে। তাই পড়ুয়া-শিক্ষককে নিয়ে এই ছিয়াত্তর বছরে দিব্যি আছি।” স্কুল ছাড়া জীবন ভাবতেই পারেন না তিনি। যতদিন জীবন থাকবে, ততদিন এই স্কুলেই শিক্ষকতা করবেন তিনি। শ্রেণিকক্ষে চক-ডাস্টার হাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ সকলের সুবল স্যার।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement