নন্দন দত্ত ও অভিরূপ দাস: করোনা (Corona Virus) প্রাণ কাড়ল আরও এক প্রথম সারির যোদ্ধার। টিকার দুটো ডোজ নেওয়া সত্ত্বেও মারণ ভাইরাসের বলি হলেন সিউড়ি হাসপাতালের (Suri) চিকিৎসক অতনুশংকর দাস। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা চলছিল তাঁর।
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র ছিলেন অতনুশংকর দাস। বয়স ৬০ বছর। কলকাতার (Kolkata) গরফা অঞ্চলের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। তবে প্রায় ১৪ বছর ধরে সিউড়ি হাসপাতালে কর্মরত। রোগী ও সহকর্মীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় অতনুবাবু কোভিড মোকাবিলায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। চিকিৎসার পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় আমজনতাকে সতর্ক করার কাজ চালাচ্ছিলেন তিনি। নিজেও কঠোরভাবে পালন করতেন কোভিড বিধি। টিকাকরণের শুরুর দিকেই কোভিশিল্ড নিয়েছিলেন তিনি। দুটো ডোজই নেওয়া হয়ে গিয়েছিল তাঁর। জানা গিয়েছে, চলতি মাসের শুরুর দিকে ছুটিতে কলকাতার গরফার বাড়িতে আসেন তিনি। দেখেন, স্ত্রী-ছেলে ও মেয়ে তিনজনই করোনা আক্রান্ত। সঙ্গে সঙ্গে কর্মস্থলে ফিরে যান তিনি। পরেরদিনই হাজির হন হাসপাতালে।
হাসপাতালে কাজ শুরু করার কয়েকদিনের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। শরীরে করোনার উপসর্গ ছিল। টেস্ট করা হলে ৭ মে রিপোর্ট আসে পজিটিভ। এরপর তাঁকে বোলপুরের (Bolpur) একটি সেফ হোমে পাঠানো হয়। কিন্তু অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল না। এরপর বোলপুরের কোভিড হাসপাতালে ভরতি করা হয় তাঁকে। শুরু হয় চিকিৎসা। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। এরপরই দুর্গাপুরের (Durgapur) একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হয় অতনুবাবুর। রবিবার সেখানেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। জনদরদী চিকিৎসকের মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই শোকস্তব্ধ সকলে। পাশাপাশি, টিকা নেওয়ার পরও চিকিৎসকের মৃত্যু আমজনতার আতঙ্ক বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ।এবিষয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক চিকিৎসক কৌশিক চাকি বলেন, “কোনও প্রতিষেধকই ১০০ শতাংশ কার্যকর নয়। তবে টিকা নিতেই হবে। টিকা নিলেও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।” পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতিতে একের পর এক চিকিৎসকদের মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করেছেন তিনি। রাজ্য যাতে মৃৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ায় সেবিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আবেদন করবেন বলেও জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, ২০২১ এর ২৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৪ মে পর্যন্ত রাজ্যের ৪৫ জন চিকিৎসক করোনার বলি হয়েছেন। চলতি মে মাসে তাঁদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩২ জনের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.