সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যুবতীর দেহ উদ্ধারের পরদিনই সন্দেশখালিতে পৌঁছল জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা। মৃতার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন অর্চনা মজুমদার। পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
অর্চনাদেবীর অভিযোগ, যুবতী নিখোঁজ হওয়ার পরই পুলিশের কাছে ডায়েরি করা হয়। তা সত্ত্বেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশ ব্যবস্থা নিলে এমন ঘটনা হয়তো ঘটত না বলেই দাবি তাঁর। রাজ্যের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সে সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য পুলিশের কাছ থেকে চান অর্চনাদেবী। উল্লেখ্য, বুধবার বিকেল চারটে নাগাদ বাড়ি থেকে সাতশো মিটার দূরে ছাগল চরাতে গিয়েছিলেন যুবতী। সঙ্গে ছিলেন তাঁর মা। কিছুক্ষণ পর মা অন্য কাজে গোয়ালঘরে চলে আসেন। তার পর থেকেই যুবতীর আর খোঁজ মেলেনি। স্কুল থেকে ফিরে মৃতার বোন জানান, দিদি মাঠে নেই। বাড়িতেও নেই। বড় মেয়ের খোঁজ না পেয়ে মৃতার মা তাঁদের মামাকে ফোনে খবর দেন।
ন্যাজাট থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করা হয়। ভাগনির নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়ে ঘোষপুরে পৌঁছে পাড়ার লোকজনকে নিয়ে তল্লাশি শুরু করেন আশিস। খবর পেয়ে মাঠে নামে পুলিশও। চতুর্দিকে চিরুনি তল্লাশি চালালেও যুবতীর খোঁজ মেলেনি। বৃহস্পতিবার কালীনগর-ভোলাখালির মধ্যে রায়পুরে ভাগনি সম্পর্কে তথ্য পান আশিস। জানতে পারেন, দুজন ছেলে ভাগনিকে নিয়ে রায়পুরের রাস্তা দিয়ে গিয়েছে। খবর যায় পুলিশে। এর পর ওই অঞ্চলে পুলিশের সাহায্য নিয়ে শুরু হয় তল্লাশি। ড্রোন উড়িয়েও তরুণীর খোঁজ চালায় পুলিশ। কিন্তু, তাতে কোনও লাভ হয়নি। তার মধ্যে শনিবার ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ এলাকারই একটি পুকুরে যুবতীর দেহ ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। বিষয়টি জানাজানি হতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।
পরিবারের অভিযোগ, যুবতীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। পুলিশেরও প্রাথমিক অনুমান, এটি খুনের ঘটনা। তবে, কোমরে ইট বাঁধা থাকায় তাঁকে ধর্ষণের পর জীবন্ত অবস্থাতেই জলে ফেলে দেওয়া হয়েছে না খুনের পর দেহ যাতে ভেসে না ওঠে, সেজন্য ইট বেঁধে জলে ফেলা হয়েছে-তা স্পষ্ট নয়। প্রশ্ন উঠেছে অন্য জায়গাতেও। শনিবার যে পুকুর থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তরুণীর দেহ উদ্ধার হয়, সেই পুকুরে বুধবার চিরুনি তল্লাশি চালিয়েও যুবতীর খোঁজ মেলেনি। এখানেই বাড়ছে রহস্য। তবে কি এই সময়ের মধ্যে কেউ দেহ ফেলে রেখে চলে যায়? নাকি আগেই ফেলে রাখা হয়েছিল, পরে ইট বেঁধে ডুবিয়ে দেওয়া হয়, তা নিয়ে ধন্দ দেখা দিয়েছে। দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই গোটা বিষয়টি পরিষ্কার হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মামার স্পষ্ট দাবি, ভাগনিকে খুন করা হয়েছে। যে পুকুর থেকে দেহ উদ্ধার হয়েছে তার পাশে একটি গোয়ালঘর রয়েছে। সেখানে শনিবার দুপুরে ঠান্ডা পানীয়ের বোতল পাওয়া গিয়েছে। ফলে, কেউ গোয়ালঘরে যুবতীর উপর অত্যাচার চালিয়ে দেহ পুকুরে ফেলে দিয়েছে কি না, সেই বিষয়টিও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। মৃত্যুর আগে যুবতীর উপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে কি না তা বোঝার চেষ্টা করছে পুলিশ। পরিবারের লোকজনের পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এলাকার লোকজনকেও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.