নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: বরুণ বিশ্বাসকে মনে আছে? নারীর মর্যাদা রক্ষার্থে যিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। নদী বাঁচানোর আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন৷ স্বল্পায়ু জীবনেই তরুণ প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠতে পেরেছিলেন তিনি৷ শুক্রবার সেই বরুণ বিশ্বাসের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে একটু অন্যভাবে শ্রদ্ধা জানানো হল৷
এদিন একটি সাইকেল ব়্যালি করে তাঁকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করল মর্যাদা সুরক্ষা আন্দোলন কমিটি। সকালে বনগাঁ নীলদর্পণ ভবনের সামনে থেকে এই সাইকেল যাত্রা শুরু হয়৷ শেষ হয় গাইঘাটার সুটিয়ার বরুণ বিশ্বাসের বাড়িতে। সেখানেই তাঁর মূর্তিতে মাল্যদান করা হয়৷ মর্যাদা সুরক্ষা আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, বরুণ বিশ্বাস দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপসহীন সংগ্রাম করেছিলেন। মহিলাদের সুরক্ষার জন্য সদা তৎপর ছিলেন৷ তাই তাঁকে হত্যা করেছিল দুষ্কৃতীরা৷ কিন্তু হত্যাকারীদের আজও শাস্তি হয়নি৷ তাদের শাস্তির দাবিতেই প্রতিবাদ জানাতে তাঁর মৃত্যুদিনে পথে নেমেছিলেন সুরক্ষা আন্দোলন কমিটির সদস্যরা।
শিয়ালদহ মিত্র ইন্সটিটিউশনের বাংলার শিক্ষক ছিলেন বরুণ বিশ্বাস। থাকতেন গাইঘাটার সুটিয়াতে। সুটিয়া গণধর্ষণকাণ্ডে বিচারের দাবিতে যে আন্দোলন হয়েছিল তার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। ২০১২ সালে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে গোবরডাঙ্গা স্টেশনে দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন বরুণ। খুনের প্রতিবাদে গোটা এলাকা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। ঘটনার তদন্ত ভার নিয়েছিল সিআইডি। কয়েকজন দুষ্কৃতী গ্রেপ্তারও হয়েছিল৷ কিন্তু তাদের আজও সাজা হয়নি। এলাকার মানুষের একটাই দাবি, দ্রুত বরুণ বিশ্বাসের খুনিদের সাজা হোক৷
এদিকে, অন্যান্যবারের মতো এবারও সুটিয়ার প্রতিবাদী মঞ্চের পক্ষ থেকে বরুণ বিশ্বাসের বাড়ির কাছে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। আবক্ষ মূর্তিতে মাল্যদান ও বরুণকে নিয়ে আলোচনা করা হয়। গত কয়েক বছর এই স্মরণসভায় হাতে গোনা কিছু মানুষই উপস্থিত থাকতেন। এবার ছবিটা পালটেছে। এদিনের স্মরণসভায় হাজির হয়েছিলেন বহু মানুষ৷ সেখানেই সিবিআই তদন্তের দাবি জানান প্রতিবাদী মঞ্চের সভাপতি ননীগোপাল পোদ্দার। তিনি বলেন, “এতদিন হয়ে গেলেও বরুণের খুনিরা শাস্তি পায়নি। এতে আমরা হতাশ। আমরা চাই সিবিআই ঘটনার তদন্ত করুক।” এদিন সকালে এলাকায় গিয়ে অবশ্য দেখা গেল, স্মরণসভার এলাকা ছাড়া আর কোথাও বরুণকে নিয়ে কোনও আলোচনা নেই৷ রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের ছবি থাকলেও, তাঁর ছবি খুঁজে পাওয়া যায়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.