অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: দেশকে রক্ষা করতে গিয়ে ফের শহিদ হলেন সবংয়ের এক যুবক। বছর দুয়েক আগে সবং থানার দশগ্ৰামের আরেক বীর জওয়ান শহিদ হয়েছিলেন। শুক্রবার দুপুরের অন্ততনাগে সন্ত্রাসবাদীদের গুলি ঝাঁঝরা করে দেয় সবংয়েরই বাসিন্দা শ্যামল কুমার দে-কে। দুপুরে গ্রামের ছেলের মৃত্যুর খবর সামনে আসতেই সবং থানার ডাঁডরা গ্ৰাম পঞ্চায়েতের সিংপুর গ্ৰামে শোকের ছায়া নেমে আসে।
একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন বাবা বাদল দে। বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন মা শিবানী দে-ও। একমাত্র ছেলের মৃত্যু সংবাদ এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না তাঁরা। ধরে আসা গলায় বাদল দে বলেন, “আজই সকাল সাড়ে এগারোটায় ছেলের সঙ্গে কথা হয়। তখন নবনির্মিত বাড়ির জলের পাইপ কিনতে গিয়েছিলাম। ছেলেকে পাইপের ছবি হোয়াটসঅ্যাপে দেখানো হয়। তারপর দেড়টার সময় আবার ফোন করি। তখন ছেলের ফোন বেজে যায়।” ,সেই সময়ই সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে গুলির লড়াই চলছিল। এরপরই দুসংবাদটা আসে। এক কম্যান্ডার ফোন করে খবরটা দেন। বাদলবাবু জানালেন, গত ডিসেম্বরে বাড়িতে ছুটি নিয়ে শেষবার বাড়ি এসেছিলেন শ্যামল। বাড়ি সম্পূর্ণ হওয়ার পর বিয়ের জন্য মেয়ে দেখার কথা ছিল। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন শ্যামল। ২০১৫ সালে এই যুবক সিআরপিএফে যোগদান করেন। পাঁচ বছরের মধ্যে গোটা পরিবারের সমস্ত স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল জঙ্গিদের নৃশংস আক্রমণে।
খবর পেয়ে নিহত জওয়ানের বাড়িতে বিকালে যান রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভুঁইয়া, বিধায়ক গীতা ভুঁইয়া, বিডিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়,সবং থানার ওসি-সহ অনেকে। মানস ভুঁইয়া শোক প্রকাশ করে বলেছেন, “বুকে পাথর চেপেও বলছি আমরা গর্বিত।” তবে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারকে দুর্বল উল্লেখ করে তিনি বলেন,” আর কত বাবা মায়ের কোল খালি হবে?” অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খড়গপুর) কাজি সামসুদ্দিন আহমেদ জানান, শনিবার জওয়ানের দেহ গ্রামে পৌঁছে যাবে। জওয়ানের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্যের প্রস্তুতি চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.