শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলায় ফের রাজনৈতিক খুন। এবার প্রাণহানি এক সিপিএম কর্মীর (CPIM Worker)। ঘটনাস্থল উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলা থানার হাসানপুর। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। ওই ব্যক্তি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করায় তাঁকে খুন করা হয়েছে বলেই দাবি। যদিও ঘাসফুল শিবিরের তরফে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে বাড়িতে খাচ্ছিলেন গুরুচাঁদ রায় নামে বছর ষাটের ওই সিপিএম কর্মী। অভিযোগ, ২জন অজ্ঞাত পরিচয় যুবক বাইকে চড়ে বাড়ির সামনে আসে। গুরুচাঁদবাবুকে বাইরে বেরতে বলে। তড়িঘড়ি খাওয়াদাওয়া সেরে বাড়ি থেকে বেরোন। রাত বাড়লেও বাড়ি ফেরেননি ওই সিপিএম কর্মী। দুশ্চিন্তা করতে থাকেন প্রতিবেশীরা। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। বাড়ি থেকে ১০০ মিটার দূরে গুলিবিদ্ধ অবস্থা গুরুচাঁদকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল চতুর্দিক। তবে তখনও প্রাণ ছিল। স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। পথেই শেষ সব কিছু। কারণ, চিকিৎসকরা জানান, মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির। ডালখোলা থানার পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠায়। কে বা কারা এই খুনের সঙ্গে যুক্ত তা বলতে পারছেন না পরিজনেরা। মাথায় হেলমেট থাকায় গুরুচাঁদবাবুর পরিবারের লোকজন বাড়িতে ডাকতে আসা ওই যুবকদের মুখও ভাল করে দেখতে পাননি।
বহু বছর ধরে সিপিএমের সক্রিয় কর্মী ছিলেন গুরুচাঁদ রায়। তাই তাঁর খুনের ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় বর্তমানে একটি ছোটখাট ব্যবসা শুরু করেছিলেন নিহত গুরুচাঁদ রায়। তাই সেভাবে দলের কাজ করতে পারছিলেন না বলেই। তবে গেরুয়া শিবিরের দাবি একেবারে অন্যরকম। বিজেপির (BJP) জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ির দাবি, বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলবদলের কথা ভাবছিলেন গুরুচাঁদ রায়। তাই তাঁকে পরিকল্পনামাফিক তৃণমূলই (TMC) খুন করেছে। যদিও তৃণমূলের তরফে সিপিএম, বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। এই খুনের ঘটনায় কোনওভাবেই ঘাসফুল শিবিরের যোগসূত্র নেই বলেই দাবি। ডালখোলা থানার পুলিশ ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে। এখনও পর্যন্ত ২জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারীরা। তাদের জেরা করেই ঘটনার কিনারা করা সম্ভব হবে বলেই আশাবাদী পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.