অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: ন’ঘণ্টা ধরে বেসরকারি থেকে সরকারি আবার বেসরকারি হাসপাতালে দৌড়ই সার। হাসপাতালে ভরতি করানো যায়নি বৃদ্ধাকে। ‘রেফার’ রোগে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হল হাওড়ার করোনা (Coronavirus) আক্রান্ত বৃদ্ধার। সঠিক সময়ে চিকিৎসা পেলে ওই বৃদ্ধা প্রাণে বেঁচে যেতেন বলেই দাবি তাঁর পরিজনদের।
দিনকয়েক ধরে জ্বর, শ্বাসকষ্ট, পেটের যন্ত্রণা-সহ একাধিক উপসর্গ ছিল হাওড়ার সদর বক্সি লেনের বাসিন্দা বনরানি কুণ্ডু নামে এক বৃদ্ধার। গত শুক্রবার থেকে তাঁর অসুস্থতা আরও বাড়তে থাকে। তাঁকে মধ্য হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। তবে উপসর্গ দেখে করোনা রোগী বলে সন্দেহ হয় ওই নার্সিংহোমের চিকিৎসকদের। তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। রবিবার রিপোর্ট হাতে আসার পর জানা যায় ওই বৃদ্ধা করোনা আক্রান্ত। পরিবারের দাবি, এরপর ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বৃদ্ধাকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করার কথা জানায়।
তাই বাধ্য হয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে করে বৃদ্ধাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাওড়ার জয়সওয়াল হাসপাতালে। বৃদ্ধার পরিবারের দাবি, সেখানে কোনও পরিষেবা পাননি তাঁরা। পরিবর্তে প্রায় ঘণ্টাদুয়েক অ্যাম্বুল্যান্সে ফেলে রাখা হয় ওই রোগীকে। হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, ওই বৃদ্ধার অবস্থা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। তাই স্বাস্থ্যদপ্তরের কন্ট্রোল রুমে বৃদ্ধার পরিজনদের ফোন করতে বলা হয়। কিন্তু ফোনে যোগাযোগ করতে পারেননি তাঁরা। ঘণ্টাদুয়েক পর গোলাবাড়ির আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই বৃদ্ধাকে। তবে ততক্ষণে সব শেষ। ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান মৃত্যু হয়েছে বৃদ্ধার। এরপর আবারও মধ্য হাওড়ার বেসরকারি হাসপাতালে ওই করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধার দেহ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ডেথ সার্টিফিকেট সংগ্রহ করেন তাঁরা। এরপর স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে মৃতার পরিজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেহ সংগ্রহ করা হয়। কোভিড বিধি মেনেই সৎকারও করা হয়েছে।
ঠিক সময়ে চিকিৎসা পেলে ওই বৃদ্ধা বেঁচে যেতেন বলেই দাবি তাঁর পরিজনদের। দিনকয়েক আগে ইছাপুরের করোনা আক্রান্ত উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মৃত্যুতেও কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বিরুদ্ধে উঠেছিল একই অভিযোগ। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও একই অভিযোগে কাঠগড়ায় রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.