প্রতীকী ছবি।
সৌরভ মাজি, বর্ধমান: মায়ের নামে বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছিলেন ছোট ছেলে। তার পর থেকে বেপাত্তা। ঋণের কিস্তি আদায়ে এসেও পাচ্ছিল না ঋণদানকারী সংস্থার কর্মীরা। টাকা ফেরতের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল মহিলার উপর। এমনকী নানাভাবে হেনস্তাও করা হচ্ছিল। মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন ওই মহিলা ও তাঁর স্বামী। বৃহস্পতিবার সকালে নিজের বাড়ি থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় ওই দম্পতির। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড় থানার বড়শুলের গোপালপুরে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম হেমন্ত মালিক (৬৫) ও রেখা মালিক (৫৫)। জানা গিয়েছে, ওই দম্পতির দুই ছেলে। বড় ছেলে মনেশ ও ছোট ছেলে রমেশ। মনেশ জানান, তাঁর ভাই বেসরকরি ঋণদান সংস্থা থেকে লক্ষাধিক টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। তার পর থেকে ভাই কোথায় চলে গিয়েছেন কেউ জানে না। তিনি বলেন, “ঋণদান সংস্থায় ওই ঋণটি মায়ের নামে নেওয়া হয়েছিল। সংস্থার লোকজন বাড়িতে এসে ঋণ শোধ করার জন্য নানাভাবে চাপ দিচ্ছিল। বাড়ি বিক্রি করে ঋণের টাকা শোধ করার জন্য চাপ দিচ্ছিল। ওদের অত্যাচারে মা মামার বাড়ি চলে গিয়েছিলেন।” মনেশের মামা জামালপুর থানার জামদহ গ্রামের বাসিন্দা রামু দোলুই বলেন, “ঋণদান সংস্থার লোকজন আমাদের বাড়িতেও হানা দিয়েছিল। রেখাকে বাড়ি থেকে টেনে বেড় করে আনে টাকা শোধ করার জন্য। দুইদিন আগেই আমাদের বাড়ি থেকে গোপালপুরের বাড়িতে আসে ওরা।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঋণদান সংস্থার লোকজন গত দুইদিনও তাগাদা দিচ্ছিলেন। বুধবার দিনভর রেখাদেবীর বাড়িতে অপেক্ষা করছিলেন। কার্যত বাইরে থেকে ঘরে তালাবন্ধ রেখে ওই দম্পতি ভিতরে লুকিয়ে ছিলেন দিনভর। খাওয়াদাওয়াও করেননি। সন্ধ্যার পর বাইরে বেরলেও আর খাওয়াদাওয়া করেননি। পরদিন সকালে ঘর থেকে দুইজনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। দেহ উদ্ধার করে বর্ধমান-২ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, যেভাবে ঋণদানকারী সংস্থার কর্মীরা ওই বৃদ্ধ দম্পতির উপর চাপ সৃষ্টি করছিল তাতেই তাঁরা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.