মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: প্রতি বছর ধুমধাম করে বিবাহ বার্ষিকী পালন করেন হাওড়ার শ্যামপুরের গোবিন্দপুরের বাসিন্দা উৎপল ও চৈতি দাস। কয়েকশো লোক আমন্ত্রিত থাকেন তাঁদের অনুষ্ঠানে। কিন্তু এই বছরটা অন্যবারের তুলনায় একেবারেই আলাদা। প্রতি মুহূ্র্তে সকলকে তাড়া করছে এক অজানা আতঙ্ক। তাই এবছর জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজনে সায় দেয়নি মন। উলটে সেই খাতে জমানো অর্থে দুস্থদের হাতে খাদ্য তুলে দিলেন দম্পতি।
২০০৬ সালের ১ মে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন উৎপলবাবু ও চৈতি দেবী। এবছর ওই দম্পতির ১৪ তম বিবাহবার্ষিকী। স্বাভাবিকভাবেই অনুষ্ঠানের পরিকল্পনাও ছিল। কিন্ত নাহ, এবার কোনও অনুষ্ঠান হবে না। বাড়িতে ভিড় জমাবেন না আত্মীয়স্বজন। কারণ, দেশের এই সংকটকালে সকলের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই দম্পতি। বিবাহবার্ষিকীর জন্য জমানো টাকা দিয়ে একটি দুর্গোৎসব কমিটির মাধ্যমে দুস্থ প্রতিবেশীদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন। সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং মেনে শনিবারই অভাবী মানুষগুলোর হাতে তুলে দিলেন পাঁচ কিলো চাল, দু কিলো আলু, পাঁচশো গ্রাম ডাল, তেল-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী। দম্পতিকে পাশে পেয়ে আপ্লুত অভাবী মানুষগুলো।
জানা গিয়েছে, পেশায় ব্যবসায়ী উৎপল। চৈতিও সেই ব্যবসার সঙ্গেই যুক্ত। তাঁদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ওই দম্পতি জানান, প্রতিবারের মতো এবারও বিবাহ বার্ষিকীর অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু হঠাৎই সব পালটে গিয়েছে। সংক্রমণের আতঙ্কে স্তব্ধ গোটা দেশ। চরম দারিদ্রতার মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন বহু মানুষ। এই পরিস্থিতিতে শুধু নিজের জন্য ভাবতে পারেননি তাঁরা। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সকলের জন্য সাধ্যমতো কিছু করার। দম্পতির এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন শ্যামপুর নাগরিক কমিটির অন্যতম কর্তা উত্তম রায়চৌধুরি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.