নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: ছোট ছোট কাগজে মোড়া প্যাকেট। এক হাতে টাকা, আরেক হাতে সেই প্যাকেট৷ চায়ের দোকানির কাছে টাকা দিয়ে হাত পাতলেই ছোট প্যাকেট গুঁজে দেওয়া হত হাতে৷ বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই, ওই প্যাকেটের মধ্যে কী আছে। ক্রেতাদের ভাষায় প্যাকেটগুলির নাম পুরিয়া। এভাবেই বাজারের মতো প্রকাশ্য জায়গায় নিজের চায়ের দোকানে বসে রমরমিয়ে গাঁজার কারবার চালাচ্ছিল এক দম্পতি। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রবিবার রাতে ওই দম্পতিকে গ্রেপ্তার করল বাগদা থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত দম্পতির নাম নিতাই রায় ও চপলা রায়। ধৃতদের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ১৯ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে৷ নিতাই ও চপলা রায়ের বাগদা বাজারে রাস্তার পাশে একটি চায়ের দোকান রয়েছে। সেখানে বসেই ছোট ছোট প্যাকেটে ধৃত দম্পতি গাঁজার কারবার চালাচ্ছিল বেশ কয়েকবছর ধরে৷ জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে, স্ত্রী চপলা রায় বাড়িতে বসে গাঁজার পুরিয়াগুলি বানাতো। এরপর সেই প্যাকেট পৌঁছে যেত চায়ের দোকানে। দোকানে গাঁজার পুরিয়া প্যাকেট করে রেখে দেওয়া হত৷ চা খাওয়ার নাম করে খদ্দেররা প্যাকেট নিয়ে যেতেন৷
জেরায় আরও জানা গিয়েছে, নিতাই ও চপলা মূলত দু’ধরনের পুরিয়া বানাতো। বড় প্যাকেটের দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং ছোট প্যাকেট গুলি ২০ থেকে ৩০ টাকা দিলেই মিলত৷ ধৃত দম্পতির বাড়িতে রাতে গেলেও পাওয়া যেত গাঁজার প্যাকেট৷ বাগদা থানার পুলিশের কাছে বেশ কয়েকমাস ধরেই এলাকায় গাঁজা বিক্রির খবর আসছিল। কিন্তু গোটা চক্রের হদিশ পাওয়া যাচ্ছিল না৷ শেষ পর্যন্ত পুলিশের পাতা ফাঁদে ধরা পড়ে ওই দম্পতি৷ দুই পুলিশ কর্মী রবিবার রাতে ক্রেতা সেজে ওই দম্পতির বাগদার বাড়িতে গিয়ে টাকা দিয়ে পুরিয়া কিনতে চান৷ প্যাকেট বের তাদের হাতে দিতেই দম্পতিকে হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিশ। ওই দম্পতির বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ গাঁজা। সোমবার ধৃতদের বনগাঁ মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়েছে৷ তাদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে গাঁজাচক্রের বিষয় বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছে বাগদা থানার পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.