টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: দাম্পত্যের অভিশাপ সন্তানহীনতা। কিন্তু, গর্ভে বারবার সন্তানের মৃত্যুও তো কম যন্ত্রণাদায়ক নয়। মানসিক অবসাদের শেষপর্যন্ত আত্মহত্যার পথই বেছে নিলেন বাঁকুড়ার এক দম্পতি। সোমবার রাতে বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর স্টেশনের মাঝে ভাদুল গ্রামে রেললাইন থেকে তাঁদের দেহ উদ্ধার করল জিআরপি। শোকের ছায়া এলাকায়।
[চিকিৎসায় গাফিলতিতে মৃত্যু ৯ মাসের শিশুর, কাঠগড়ায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ]
বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণপুর শহরের বাসিন্দা অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়। একসময়ে কর্মসূ্ত্রে হরিয়ানা থাকতেন তিনি। বছর দশেক আগে অসীমের সঙ্গে বিয়ে হয় বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা পায়েলের। বিয়ের পর, ভিনরাজ্যে সংসার পেতেছিলেন নবদম্পতি। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, হরিয়ানায় থাকাকালীন বেশ কয়েকবার গর্ভবতী হয়েছিলেন পায়েল। কিন্তু, প্রতিবারই গর্ভে সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। এরপর থেকে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন অসীম ও পায়েল। ২০১৩ সালে বাঁকুড়ায় ফিরে আসেন তাঁরা। কিন্তু, দুর্ভাগ্য পিছু ছাড়েনি ওই দম্পতির। পরিবারের লোকেদের দাবি, বাঁকুড়ায় আসার পরও পায়েলের গর্ভে সন্তান এসেছিল। কিন্তু, সেই সন্তানকে ধরে রাখতে পারেননি তিনি। যথারীতি গর্ভেই নষ্ট হয়ে যায় ভ্রুণ। চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, গর্ভাবস্থায় জাইগোটে বারবার সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে। তাই ভ্রুণ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এভাবে বারবার সন্তান সুখ থেকে বঞ্চিত হওয়ার যন্ত্রণা আর সহ্য করতে পারলেন না অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী পায়েল। রেললাইন আত্মঘাতী হলেন ওই দম্পতি।
[ফাঁকা বাড়িতে একা পেয়ে প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণ, ধৃত যুবক]
বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর স্টেশনের মাঝে ভাদুল গ্রাম। গ্রামের পাশ দিয়ে চলে গিয়েছে রেললাইন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সোমবার রাতে যখন রাঁচি থেকে হাওড়াগামী ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস আসছিল, তখন রেললাইন ধরে ট্রেনের দিকে এগিয়ে যান অসীম ও পায়েল। দ্রুতগামী ট্রেনের ধাক্কায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় দু’জনের দেহ। ঘটনার পর, বাঁকুড়া স্টেশনের জিআরপিতে খবর দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনাস্থলের গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে জিআরপির কর্মীরা। ঘটনার শোকের ছায়া নেমেছে দুই পরিবারেই। আত্মীয়রা বলছেন, সন্তান না হওয়ায় মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ঠিকই। তবে এভাবে যে নিজেদের শেষ করবে দেবেন ওই দম্পতি, তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি তাঁরা।
ছবি: সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়
[পার্বতীর মতো স্ত্রী চাই, দেওঘরে বৈদ্যনাথের মাথায় জল ঢেলে আরাধনায় পুরুষরা
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.