ছবি: জয়ন্ত দাস
ধীমান রায়, কাটোয়া: মঙ্গলকোটে গাঁজা ও অস্ত্র-সহ তিন দুষ্কৃতীকে হেফাজতে নিয়ে ওই চক্রের আরও এক জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানায় ধৃত ব্যক্তির নাম সংকেত ঘোষ। তার বাড়ি বীরভূম জেলার নানুর থানা এলাকার রামকৃষ্ণপুর গ্রামে। শুক্রবার রাতে বাড়ি থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ। ধৃতের একটি মোটর বাইকও আটক করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ধৃত নানুর থানার একজন সিভিক ভলান্টিয়ার। কাটোয়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কৌশিক বসাক বলেন,”এই চক্রের সঙ্গে একজন সিভিক ভলান্টিয়ারের যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। আমরা তাকে গ্রেপ্তার করেছি। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
বুধবার গভীর রাতে মঙ্গলকোটের নতুনহাটে লোচন দাস সেতুতে নাকা চেকিংয়ের সময় ২৪ কেজি গাঁজা-সহ তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১৩ রাউন্ড গুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়। বিহারের বাসিন্দা টুনটুন কুমার, পিন্টু কুমার এবং মঙ্গলকোটের কোটালঘোষের বাসিন্দা রাজেশ শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়। আপাতত তারা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। ধৃতদের জেরা করে সংকেত ঘোষের নাম উঠে আসে। তারপর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গাঁজা ও অস্ত্র পাচারের মামলায় কার্যত কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে এসেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গাঁজা ও অস্ত্রপাচারের এই ঘটনায় মাস্টারমাইন্ড হল শেখ রাজু। সে মঙ্গলকোটের তৃণমূল নেতা অসীম দাস হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত। গত বছর ১২ জুলাই সন্ধেয় খুন হন মঙ্গলকোটের লাখুড়িয়া অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি অসীম দাস। তার এক মাসের মধ্যেই শেখ রাজুকে দিল্লি থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। বর্তমানে শেখ রাজু বর্ধমান সংশোধনাগারে বিচারাধীন বন্দি। জেলে বসেই শেখ রাজু ফোন মারফত গাঁজা ও অস্ত্রপাচারের চক্র চালিয়ে আসছিল। তার মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই পুলিশ এবং এসওজি সেল গত বুধবার অভিযান চালিয়ে ওই তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করে।
বীরভূমের নানুর থানা এলাকার সিতাই গ্রামে বাড়ি শেখ রাজুর। যদিও মঙ্গলকোটের মল্লিকপুরে শ্বশুরবাড়িতে থাকত সে। বেআইনি বালির কারবার করত রাজু। ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সংকেত ঘোষের সঙ্গে তার ছোটবেলা থেকেই মেলামেশা। জেলে বসেই রাজুর সঙ্গে সংকেত যোগাযোগ রাখত। পুলিশ সূত্রে খবর, সংকেত ঘোষের তত্ত্বাবধানে বীরভূমের শান্তিনিকেতনে একটি লজে গত ২২ মে থেকে ঘাঁটি গেড়েছিল টুনটুন কুমার ও পিন্টু কুমার। তারপর গাঁজা ভরতি তিনটি ব্যাগ নিয়ে বুধবার রাতে মঙ্গলকোট সীমান্ত পর্যন্ত টুনটুন কুমার ও পিন্টু কুমারকে পৌঁছে দিয়ে গিয়েছিল সংকেত ঘোষ। ধৃতকে শনিবার কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হয়। তাকে ৪ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওদিকে জেলের মধ্যে একজন খুনের মামলার আসামি কীভাবে মোবাইল পেল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.