অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: ডেকে নিয়ে গিয়ে শিশুকে খুনের অভিযোগ উঠল এক নাবালক তান্ত্রিকের বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে খড়গপুরের নিরঞ্জনবাড় এলাকায়। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই অভিযুক্ত কিশোরের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় স্থানীয়রা। পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই আটক করা হয়েছে ওই কিশোরের গোটা পরিবারকে। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, মৃতকে জীবিত করে নিজের হাতযশের প্রমাণ দিতেই শিশুটিকে খুন করে অভিযুক্ত।
জানা গিয়েছে, শনিবার বিকেলে বাড়ি থেকে বের হয় রুদ্র নায়েক নামে বছর সাতেকের ওই শিশু। এরপর দীর্ঘক্ষণ পেরিয়ে গেলেও খোঁজ পাওয়া যায়নি তাঁর। দীর্ঘক্ষণ পেরিয়ে গেলেও ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে এলাকায় তান্ত্রিক বলে পরিচিত এক নাবালক পিন্টা নায়েকের কাছে যান পরিবারের সদস্যরা। সে জানায়, কেউ অপহরণ করেছে ওই শিশুটিকে। এরপর ফের দীর্ঘক্ষণ এলাকায় খোঁজাখুঁজি করেন তাঁরা। এরপর সন্ধেবেলা ওই শিশুটির ঠাকুমা পিন্টার বাড়িতে যায়। শিশুর পরিবারের দাবি, সেই সময় পিন্টা তাঁকে বাড়ি ফিরে যেতে বলে এবং তাঁকে আশ্বাস দেয় যে রবিবার বিকেলে সে রুদ্রকে বাড়িতে দিয়ে আসবে। এরপরই ওই তান্ত্রিকের কাছে শিশুটির বর্তমান অবস্থান জানতে চাইলে কিছুই বলতে রাজি হয়নি সে। দীর্ঘক্ষণ পর চাপে পড়ে ঘর থেকে শিশুটিকে অচৈতন্য অবস্থায় বের করে পিন্টু। ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনাটি জানিয়ে খড়গপুর গ্রামীণ থানার সদাতপুর ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন স্থানীয়রা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটিকে চাইতেই বেঁকে বসে পিন্টু। সে জানায়, তার কাছ থেকে শিশুটিকে নিয়ে যেতে হলে লিখিত দিতে হবে।
পরে জোর করেই শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। সেই খবর গ্রামে পৌঁছতেই অভিযুক্তের বাড়ির ভাঙচুর চালায় স্থানীয়রা। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পিন্টু নায়েকের পরিবারের সকল সদস্যকে আটক করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, তন্ত্র সাধনায় নিজের কেরামতির প্রমাণ দিতেই শিশুটিকে তুলে নিয়ে যায় অভিযুক্ত। এরপর ঘটনাচক্রে মৃত্যু হয় শিশুটির। তবে ঠিক কী হয়েছিল শনিবার, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এদিনের ঘটনার জেরে এখনও থমথমে এলাকা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.