জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: বুধবারই শেষ মাধ্যমিক(Madhyamik)। আর শেষ দিনেই দুই স্কুলের ছাত্রদের মধ্যে মারপিটে তুলকালাম পরিস্থিতি চাঁপাবেড়িয়া হাই স্কুলের পরীক্ষাকেন্দ্রে। মারামারি থামাতে গিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রেই এক মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারকে জুতো পেটা করারও অভিযোগ ওঠে এক অভিভাবকের বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ঘটনাস্থলে যায় বিশাল পুলিশবাহিনী।
ঘটনার সূত্রপাত গত সপ্তাহের শনিবার। নিউ বনগাঁ বয়েজ হাই স্কুল, শক্তিগড় হাই স্কুল, অসিত বিশ্বাস শিক্ষা নিকেতন ও নতুনগ্রাম সুভাষিনী হাই স্কুল, এই চার স্কুলের পড়ুয়াদের এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্র (Examination Hall) হিসেবে স্থির হয় চাঁপাবেড়িয়া হাই স্কুল। স্কুলের দুটি বিল্ডিংয়ে পরীক্ষার্থীদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়। শনিবার পরীক্ষা চলাকালীন শক্তিগড় হাই স্কুল ও নিউ বনগাঁ বয়েজ হাই স্কুলের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে শৌচালয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল৷ স্থানীয়রা জানান, সেদিন পরীক্ষা শেষে দুই স্কুলের ছাত্রদের মধ্যে বাড়ি ফেরার পথে মারামারি হয়। নিউ বনগাঁ হাই স্কুলের পরীক্ষার্থী সুরজিৎ কুণ্ডুর মা বলেন, “আমার ছেলে অসুস্থ, ওকে বারবার শৌচালয়ে যেতে হয়। এই নিয়ে সেদিন শক্তিগড় স্কুলের কয়েকজন ছাত্র ওকে উত্যক্ত করে। পরে পরীক্ষার শেষে আমার ছেলে-সহ কয়েকজনকে ওই স্কুলের ছাত্ররা মারধর করে৷”
পরে স্কুলের শিক্ষকেরা মধ্যস্থতায় সেই সমস্যার সমাধান হয়৷ পরের দিন থেকেই চাঁপাবেড়িয়া হাই স্কুলের শিক্ষকরা শক্তিগড় স্কুল ও নিউ বনগাঁ হাই স্কুলের পরীক্ষার্থীদের দুটি আলাদা বিল্ডিংয়ে বসার ব্যবস্থা করে দেন। তবে এদিন সকালে দুটি আলাদা গেট দিয়ে দুই স্কুলের ছাত্ররা পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের পর অশান্তি বাধে। অভিযোগ, পরীক্ষা শুরুর মিনিট পাঁচেক আগেই শক্তিগড় হাই স্কুলের ছেলেরা নিউ বনগাঁ হাই স্কুলের বিল্ডিংয়ে ঢুকে সুরজিৎকে ফের মারধর করলে দুই স্কুলের ছাত্রদের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। ছাত্রদের মারামারিতে দুই অভিভাবিকা উসকানিমূলক মন্তব্য করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে যান কর্তব্যরত মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার। তখনই তাঁর উপর চড়াও হয়ে জুতো দিয়ে মারধরের অভিযোগ ওঠে এক অভিভাবকের বিরুদ্ধে। পালটা ওই মহিলা সিভিক ভলিন্টিয়ারও অভিযুক্ত অভিভাবককে জুতোপেটা করেন বলে অভিযোগ জানান অভিভাবক। অভিযুক্ত অভিভাবককে থানায়ও নিয়ে যাওয়া হয়।
পুরো ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়ায় স্কুলচত্বরে। বিরক্ত হয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে পরিস্থিতি নিয়্ন্ত্রণের দাবি করেন স্কুলের বাকি অভিভাবকরা। তাঁরা জানান, পরীক্ষাকেন্দ্রে এইভাবে মারামারি হলে বাকি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেওয়ার মানসিকতা নষ্ট হবে। পরে স্কুল কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে নিয়ন্ত্রণে আসে পরিস্থিতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.