সম্যক খান, মেদিনীপুর: চলছিল ক্যানসারের চিকিৎসা। কেমো নিতে গিয়েছিলেন হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে। আর সেখানেই ধরা পড়ল – করোনা পজিটিভ। তৎক্ষনাৎ খড়গপুর ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঁচডিহা গ্রামের বাসিন্দা ওই মহিলাকে স্থানান্তরিত করা হল করোনা হাসপাতালে। আর তাঁর পরিবারের সদস্য ও তাঁর সংস্পর্শে থাকা লোকজনকে করোনা পরীক্ষার জন্য ওই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো। আপাতত তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করে হোম কোয়ারেন্টাইনেই রাখা হবে।
জানা গিয়েছে, কাঁচডিহা গ্রামের পঞ্চাশোর্ধ্ব ওই মহিলা ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত। লকডাউনের মধ্যেই গত ১৬ এপ্রিল তিনি তৃতীয় কেমো নিতে গিয়েছিলেন হাওড়ার ওই বেসরকারি হাসপাতালে। বাড়ির লোকজন তাঁকে সেখানে ভরতি করে বাড়ি ফিরে আসেন। সেই থেকে ওই হাসপাতালেই রয়েছেন মহিলা। ভরতি থাকাকালীন তাঁর শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ায় গত ৩০ এপ্রিল তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ২ মে রিপোর্ট আসে। দেখা যায়, তিনি করোনা পজিটিভ। সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে তাঁকে উলুবেড়িয়ার COVID হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত সঞ্জীবনীতে। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন কাঁচডিহার ওই বাসিন্দা।
এদিকে, ক্যানসার আক্রান্ত ওই মহিলার করোনা রিপোর্ট পজিটিভ, একথা জানার পর থেকেই কাঁচডিহা গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ওই মহিলার সংস্পর্শে কারা কারা থেকেছেন, তার খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়। মহিলার বাড়িতে তাঁর স্বামী, পুত্র ও পুত্রবধূ আছেন। ছেলে ফুলের ব্যবসা করে। ওই মহিলার মেয়ের বিয়ে হয়েছে মেদিনীপুর সদর ব্লকের পাথরা গ্রামে। মেয়ের পরিবারও হাসপাতালে ভরতির দিন মায়ের সংস্পর্শে এসেছিলেন। তাই রবিবার তাঁর স্বামী, পুত্র, পুত্রবধূ, মেয়ে-জামাই, দুই নাতি এবং যে গাড়িতে করে তাঁকে হাওড়ার হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেই গাড়ির মালিক এবং চালকের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা। এঁদের রিপোর্ট পাওয়ার পর ফের পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা জানিয়েছেন, দু’সপ্তাহেরও বেশি আগে ওই মহিলা হাওড়ার হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন। এখন তাঁর নমুনায় করোনা পজিটিভ এসেছে। তাই সতর্কতা হিসেবে ওই মহিলার সংস্পর্শে থাকা সকলেরই করোনা পরীক্ষা করা হবে। যে ব্লকে এমন পরিস্থিতি অর্থাৎ খড়গপুর ২ মং ব্লক, তা খোদ জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতির হোম ব্লক। অজিতবাবু জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতিও। তার বাড়ি অবশ্য কাঁচডিহা গ্রাম থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে মাদপুরে। অজিতবাবুও বলছেন, ”সতর্কতামূলকভাবে সবরকম পদক্ষেপই গ্রহণ করা হচ্ছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.