টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: কলকাতার একাধিক সরকারি হাসপাতালে ঘুরেও সুরাহা মেলেনি। কোথাও ক্যানসার আক্রান্তের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করতেই ১ মাস পেরিয়েছে। কোথাও আবার তাও হয়নি। অবশেষে দিশা দেখাল বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর এখন অনেকটাই সুস্থ নদিয়ার সোমাদেবী।
জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন যে, ক্যানসার আক্রান্ত সোমা দে। চিকিৎসার জন্য প্রথমেই কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। অভিযোগ, সেখানে বায়োপসি রিপোর্ট হাতে পাওয়ার আগেই অস্ত্রপ্রচার করতে চেয়েছিলেন চিকিৎসকরা। তাতে রাজি হয়নি রোগীর পরিবার। এরপর সেখান থেকে সোমাদেবীকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। অভিযোগ, সেখানে বায়োপসি হলেও রিপোর্ট হাতে পেতে মাস গড়িয়ে যায়। এরপরই করোনা সংক্রমণ রুখতে জারি হয়েছে লকডাউন। ফলে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে আর কোনওরকম চিকিৎসাই পাচ্ছিলেন না সোমাদেবী। অবশেষে চিকিৎসার জন্য স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত সোমাদেবীকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে নিয়ে যায় পরিবার।
সোমা দেবী জানান, সেখানে যাওয়ার পরই শুরু হয়েছে কেমোথেরাপি। বেশ কয়েকটি শারীরিক পরীক্ষা করার পর হয় অস্ত্রোপ্রচার। বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শল্য চিকিৎসক উৎপল দে জানান, আপাতত সোমাদেবী সুস্থ। জানা গিয়েছে, এখন তিনি বাড়িতেই। তবে নদিয়ার চাকদহ থেকে কেমোথেরাপির জন্য বারবার ছুটতে হয় বাঁকুড়ায়। সোমবারও নিয়ম মেনে চাকদহ থেকে বাঁকুড়া এসেছিলেন তিনি। যখন ক্যানসারের প্রচলিত ওষুধে কাজ হচ্ছে না। প্রচলিত বেশির ভাগ কেমোথেরাপিও এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। প্রথম অবস্থায় ধরা পড়লেও কয়েক মাসের মধ্যে রোগ হুড়হুড় করে বেড়ে স্টেজ-ফোরে পৌঁছে যাচ্ছে। সেখানে চিকিৎসায় এমন গাফিলতিতে ক্ষুব্ধ ওই মহিলার পরিবার। সোমাদেবীর ছেলে শুভজিৎ দে-র কথায়, “মায়ের শরীরে মারণ রোগ ধরা পড়ার পর দিশেহারা হয়ে গিয়েছিলাম। সেই সময় রাজ্যের প্রথম সারিতে থাকা এসএসকেএম এবং কলকাতা মেডিক্যালের মত হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসা অবহেলায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে গিয়েছিল। অবশেষে বাঁকুড়ায় এসে স্বস্তি পেলাম।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.