দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: ক্যানসার আক্রান্ত তিন বছরের শিশুর হঠাৎই শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরিবারের লোকজন অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য ছোটাছুটি শুরু করেন। কিন্তু স্থানীয় পঞ্চায়েতের কাছে মৃত্যুপথযাত্রী শিশুর জন্য কাকুতি মিনতি করার পরও কোনো অ্যাম্বুল্যান্স মেলেনি। অনেক পরে তাকে অন্য একটি অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময়ই মৃত্যু হয় শিশুটির। এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়ে এলাকার মানুষ। বুধবার তারই জেরে তারকেশ্বর বালিগড়ি ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা।
তারকেশ্বর বালিগোড়ি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের আমতলার বাসিন্দা দম্পতি পলাশ ভূমিচ ও শিখা ভূমিচের তিন বছরের মেয়ে সুইটি। সে দীর্ঘ তিন বছর ধরে ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত। শিশুটির বাবা-মা জানান, মঙ্গলবার তাঁদের মেয়ের অবস্থার অবনতি হয়। কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হয়। তাঁদের অভিযোগ, মেয়েকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনও গাড়ির ব্যবস্থা করতে পারেননি তাঁরা। স্থানীয় পঞ্চয়েতের অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য প্রধানকে বারবার ফোন করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। অভিযোগ, প্রধানের নির্দেশ ছিল ড্রাইভার যেন অ্যাম্বুল্যান্স বের না করে। এর আগেও তিনি দু’বার ২ হাজার টাকা ভাড়া গুনে ওই অ্যাম্বুল্যান্সে করেই মেয়েকে নিয়ে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন বলেই দাবি ক্যানসার আক্রান্ত শিশুর পরিবারের। কিন্তু এবার তাঁদের ওই অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়া হয়নি। কয়েক ঘন্টা পরে অন্য একটি অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিয়ে যাওয়ার পথে শিশুর মৃত্যু হয়। চরম অমানবিক এই ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন শিশুকন্যার বাবা-মা।
প্রধান হারাধন মজুমদার বলেন, “এর আগেও বেশ কয়েকবার অ্যাম্বুল্যান্সে মেয়েটিকে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গত মাসে ওখান থেকে ফিরে আসার পর তাঁদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছিল। পাশাপাশি বলা হয়েছিল মেয়েটির কিছু হলে আমাকে যেন জানানো হয়। কিন্তু আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। ওঁরা চালকের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু সে আমাকে কিছু জানায়নি। জানালে আমি অ্যাম্বুল্যান্স পাঠিয়ে দিতাম।” এদিকে এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরই বুধবার পঞ্চায়েত প্রধানকে ঘিরে গ্রামবাসীরা ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় তারকেশ্বর থানার পুলিশ। উত্তেজিত জনতাকে নিয়ন্ত্রণে আনে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.